চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পৌর সদর, গোমদন্ডী ফুলতল, শাকপুরা চৌমুহনী বাজার এবং কানুগোপাড়া এলাকায় যানজটের দুর্ভোগ থেকে রেহায় মিলছে না জনসাধারণের।চলার গতি হঠাৎ থমকে যায় দীর্ঘ যানজটে।এ অসহনীয় যানজটের মূল কারণ রাস্তার পাশে বৈধ ও অবৈধ গাড়ি পার্কিং ও ফুটপাত দখল করে বসা হকাররা।সেইসাথে সড়কের দুইপাশে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং তো আছে।
শনিবার(২৩ মার্চ)বিকেলে বোয়ালখালীর বিভিন্ন স্পটে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বোয়ালখালী উপজেলা সদর, গোমদন্ডী ফুলতল ও শাকপুরা চৌমুহনী বাজার এলাকায় প্রধান সড়কের দুইপাশে ট্রাক, মিনি ট্রাক, ড্রাম্পট্রাক সহ বিভিন্ন মাল বাহী গাড়ীগুলো দিনের বেলায় রাস্তায় পার্কিং করে মালামাল অনলোড করে। এছাড়াও যত্রতত্র অনিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান,
সিএনজি চালিত আটোরিক্স, প্রাইভেট কার,মোটরসাইকেল ও ব্যাটারী চালিত আটোরিক্সার সংখ্যাও কম নয়। তারা সড়কের দুইপাশ দখল করে নিয়মিত যাত্রী উঠা-নামা করাচ্ছেন। এসব অটোরিকশার অধিকাংশ চালক অনভিজ্ঞ এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন। অনেক ক্ষেত্রে কম বয়সি কিশোর এমনকি শিশুদেরও অটোরিকশার ড্রাইভিং সিটে দেখা যায়। এসব এলাকায় সড়কের দুই পাশে ফুটপাতগুলোও দখল করে আছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও হকারা। যত্রতত্র যানবাহন দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী ওঠা-নামা করানোর কারণে প্রতিটি মোড়েই এক ধরনের বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। রাস্তার ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বৈধ ও অবৈধ যানবাহন (যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক) চলাচলের ফলে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। যানজট লেগে থাকার কারণ এসব এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা না থাকা, সড়কে টোকেনবাজি ও বোয়ালখালী দায়িত্বশীলদের কোনো উদ্যোগও নেই, নজরও নেই এমনটি মনে করছেন সাধারণ জনসাধারণ।
বোয়ালখালী কানুগোপাড়া এলাকার স্হানীয় জনসাধারণ বলেন,রাস্তার তুলনায় গাড়ির সংখ্যা বেশি। আবার গাড়ির তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। সড়কের দু’পাশে দিনভর অসংখ্য গাড়ি পার্ক করে রাখার কারণে গাড়ি চলাচলের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হওয়ায় যানজট লেগে থাকে এসব এলাকায়। ফলে এই এলাকায় যাতায়াতকারীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
বোয়ালখালী উপজেলা সদরের স্হানীয় জনসাধারণ বলেন, বোয়ালখালী উপজেলা জুড়ে চলছে বৈধ ও অবৈধ গাড়ীর পার্কিং নৈরাজ্য। যেমন খুশি যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং করছে সড়কের দুইপাশে। এ অসহনীয় যানজটের মূল কারণ রাস্তার পাশে অবৈধ গাড়ি পার্কিং ও ফুটপাত দখল। এতে কাংখিত গন্তব্যে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। যানজটের ভোগান্তি থেকে রেহায় মিলছে না বোয়ালখালী বাসীর। দ্রুত এই সকল যানবাহন অবৈধভাবে পার্কিং বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বোয়ালখালী প্রশাসন- এমনটাই প্রত্যাশা জনসাধারণের।
বোয়ালখালী শাকপুরা চৌমুহনী বাজার ও ফুলতল এলাকার স্হানীয় জনসাধারণ বলেন, শাকপুরা চৌমুহনীএলাকায় প্রতিদিন যানজট লেগে থাকে এছাড়া সপ্তাহের রোববার ও বুধবার শাকপুরা হাট হওয়ায় এই দুই দিন যানজট যেন আরো তীব্র আকার ধারণ করে। আর অসহনীয় এই যানজটের কবলে পড়ে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, ঘটছে দুর্ঘটনাও। কিন্তু এসব ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের কোনো উদ্যোগও নেই, নজরও নেই বলে জানায় তারা।
বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রেজাউল করিম রাজা বলেন,আমরা বোয়ালখালী উপজেলার বাজার ও ফুটপাতে হকারদের তুলে দিয়েছি। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে যাওয়ার পর তারা পুনরায় আবার ফুটপাতে বসে।সড়কের দু’পাশে দিনভর অসংখ্য গাড়ি এলোমেলো ভাবে পার্ক করে রাখার কারণে গাড়ি চলাচলের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হচ্ছে। পেতন আউলিয়ার মাজার থেকে অলিবেকারী পর্যন্ত বিকল্প সড়কের কাজ চলমান আছে আশা করি সড়কটি হয়ে গেলে উপজেলা সড়ক থেকে গাড়ীর চাপ কমে যাবে বলে জানান তিনি।
বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, বোয়ালখালী বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার দুইপাশে বৈধ ও অবৈধ গাড়ীর পার্কিং,ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নিতে ট্রাফিক পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।ফুটপাত দখলের বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।