চন্দনাইশে প্রথম স্ত্রীর নির্যাতনে ১৩ দিন ধরে ঘর ছাড়া দ্বিতীয় স্ত্রী

চন্দনাইশের বরমা ইউনিয়নের চর বরমা এলাকায় নুরুল মোস্তফার প্রথম স্ত্রী বুলু আক্তার এবং তার স্বজনদের নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় হয়রানিতে ১৩ দিন ধরে ঘর ছাড়া দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিন আক্তার(৪৫)। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ও ঘরে ফিরতে জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৫জনকে আসামী করে একটি মামলাও দায়ের করে। এরপরও স্থানীয় প্রবাবশালীদের ভয়ে ঘরে ফিরতে পারছেনা জেসমিন আক্তার ও তার সন্তানেরা। এতে করে চরম অনিরাপত্তায় ভোগছেন জেসমিন আক্তার।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বরমা ইউনিয়নের চর বরমা এলাকার মৃত পেচু মিয়ার মেয়ে জেসমিন আক্তারের প্রথম স্বামী আবুল কাশেম ২০১৫ সালে মারা যাওয়ার পর স্থানীয় নুরুল মোস্তফা নামে এক ব্যক্তি তাকে ২০১৬ সালে বিয়ে করে। বিবাহকালীন সময়ে নুরুল মোস্তফার এক স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে ছিল এবং জেসমিন আক্তারের ঘরেও দুই ছেলে ৪ মেয়ে ছিল। বিয়ের পর নুরুল মোস্তফার প্রথম স্ত্রী বুলু আক্তার, তার ছেলে-মেয়ে ও স্বজনরা জেসমিন আক্তার এবং তার প্রথম ছেলে মেয়েদের উপর নানা হয়রানি ও নির্যাতন শুরু করে। গত ১০ জুলাই কোরবানের দিন বুলু আক্তার ও তার স্বজনরা জেসমিন আক্তারের বসতঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগসহ ভাংচুর করে।

এসময় জেসমিন আক্তারের গোয়াল ঘর থেকে তিনটি গরু, স্বর্ণের চেইন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে জেসমিন আক্তার তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে বুলু আক্তারের স্বজনরা ঘটনার দিন রাতে দ্বিতীয় দফায় আবারও হামলা করে। এসময় জেসমিন আক্তারের রান্না ঘরের পেছনে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে তারা উল্টো জেসমিন আক্তার ও তার ছেলে মেয়েদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে।

এদিকে জেসমিন আক্তার ও তার মেয়েরা ১৩ দিন ধরে ঘর ছাড়া হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উপায়ন্তর না দেখে জেসমিন আক্তার জীবণের নিরাপত্তা চেয়ে ও ঘরে ফিরতে ঘটনার সাথে জড়িত সিরাজুল মোস্তফা, মো. ফরমান, মো. লোকমান, বাচা মিয়া, মো. আরমান, হাসিনা বেগম, ইউনুস, নাজিম, মো. রফিক, নুর হোসেন, আবদুল মোতালেব, মো. রায়হান, মো. আনিস, মো. রাসেল ও বুলু আক্তারকে আসামী করে গত ১৭ জুলাই আদালতে মামলা দায়ের করে।

ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার বলেন, কোরবানের দিন আমার ছেলে মেয়েসহ সবাইকে মেরে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। ভয়ে ঘরে যেতে পারছিনা। আমি আমার জীবণের নিরাপত্তা চায়। আমাকে প্রতিপক্ষ নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে।

সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা-বাঁশখালী-চন্দনাইশ সার্কেল) হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন