পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে সরে গেলেন তিন প্রার্থী, রইলো বাকী দুই
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার নির্বাচনী মাঠে আগেরদিন উত্তাপ ছড়িয়ে পরেরদিন চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীতা থেকে সরে দাড়ালেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম বদিসহ তিন প্রার্থী। নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকা চেয়ারম্যান প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলমের সাথে শনিবার নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী বদি’র সাথে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছিলো। ফলে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় নির্বাচন উত্তপ্ত হওয়ার পথেই হাঁটছিলো বলে সকলের ধারণা ছিলো। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারে শেষ দিন রবিবার (১২ মে) অন্য দুই প্রার্থীর সাথে বদিউল আলম বদি তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় এ যাত্রায় সে শঙ্কা থেকে রক্ষা পেলো পটিয়াবাসী। বদি’র সাথে মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী অপর দুই প্রার্থী হলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপ দাশ ও পটিয়া উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক সৈয়দ নুরুল আবছার। রবিবার চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদন করে নির্বাচন থেকে তারা সরে দাঁড়ান।
তিন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদের সাথে দ্বিমুখী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছেন খালেক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, নগর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার।
আসন্ন পটিয়া উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে যখন দুই যুবলীগ নেতা ও তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়াচ্ছিলো, তখন এই দুই প্রার্থীকে নিয়ে সমঝোতো বৈঠকে বসেছিল জেলা ও উপজেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে নগরীর পিটস্টপ রেস্টেুরেন্টে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কোনো সুরাহা না হলেও বৈঠক শেষে বদি ও দিদারের মধ্যে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়েছিলো। নির্বাচনে অনড় থাকার একদিন পরই হঠাৎ নির্বাচন থেকে বদির সরে দাড়ানো নিয়ে উপজেলা জুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পটিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫ জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। রবিবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী। এমনটি জানিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ জানান, অন্য তিনজন প্রার্থী আমাকে সমর্থন জানিয়ে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন করেও ফোন রিসিভ না করায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করা তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে ২জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
এতে ভাইস চেয়ারম্যান পদের একজন ছাড়া সবাই আওয়ামী লীগ ঘরনার প্রার্থী। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী প্রার্থীরা হলেন সাইফুল হাসান টিটু, আবু ছালেহ মুহাম্মদ শাহরিয়ার শারু, ডা. এমদাদুল হাসান, আশীষ তালুকদার, ঝুলন দত্ত, মোজাম্মেল হোসেন, মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, মুহাম্মদ বেলাল। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাজেদা বেগম শিরু, সাজেদা বেগম, কানিজ ফাতেমা, আফরোজা বেগম, নুর আয়েশা বেগম ও সুমি দে।
চেয়ারম্যান পদ থেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা বদিউল আলম বদি সরে দাড়ানোর ফলে বর্তমানে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী অধ্যাপক হারুনুর রশিদ ও যুবলীগ নেতা দিদারুল আলম দিদারের মধ্যে দ্বিমুখী জমজমাট লড়াই হবে বলে পটিয়াবাসী ধারণা করছেন।