চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের বর্ধিত সভার ব্যানারে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর এপিএস রিদুওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েমের ছবি থাকায় হট্টগোল শেষে একটি অংশ সভা বয়কট করেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এরূপ পরিস্থিতিতে যেকোন প্রোগ্রামের ব্যানার করতে গেলে জেলা যুবলীগের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়ার বাধ্যবাধকতা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগ।
জানা গেছে রবিবার (১২ মে) রাত ৯ টায় কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা শুরু হয় চরলক্ষ্যার এইচটি কনভেনশন সেন্টারে। কিন্তু সভার ব্যানারে দলীয় কোন পদ-পদবীতে না থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রীর এপিএস সায়েমের ছবি থাকা নিয়ে সভার শুরুতেই বাধে হট্টগোল। একপর্যায়ে যুবলীগের একটি অংশ সভা বয়কট করে চলে যায়। তবে সভার কার্যক্রম রাত ১২টা পর্যন্ত চলেছে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন ও অন্যান্য নেতারা।
জানা গেছে, সভার শুরুতে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা মাহবুব বর্ধিত সভায় দাঁড়িয়ে জানতে চান, ব্যানারে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর এপিএস রিদুওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েম এর ছবি যুবলীগের কোন গঠনতন্ত্র মতে লাগানো হয়েছে। তিনিতো দলের কোনো পদ পদবীতে নাই। এ প্রশ্ন করার সাথে সাথে সভার প্রধান অতিথি দিদারুল ইসলাম তাকে থামানোর চেষ্টা করেন। এসময় শুরু হয় হট্টগোল। উত্তেজিতরা পরবর্তীতে সভার কার্যক্রমকে বয়কট করে হলের বাইরে গিয়ে অবস্থান নেন। এসময় কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা মাহবুব, শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ছৈয়দ, সহ-সম্পাদক মো. হানিফ, সদস্য সোলাইমান কবির ও চরপাথরঘাটা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ উদ্দিন চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়।
কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মাহবুব বলেন, ‘বর্তমান কমিটি একধরণের স্বেচ্ছাচারী মনোভাব পোষণ করছেন। এভাবে দল চালানো যায় না। ব্যক্তি স্বার্থে দল চালাতে গেলে ঝামেলা তৈরী হবেই। ব্যানার নিয়ে প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে ওনারা বরং উল্টো দোষারূপ করে নেতৃবৃন্দকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
তবে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা বর্ধিত সভায় যার যা ইচ্ছে বলতে পারে। আমরাও তা এনজয় করেছি। কোন সমস্যা নেই। তবে মির্জা মাহবুব ব্যানারে থাকা ছবি নিয়ে প্রশ্ন করেছেন, সেটা সত্য। কিন্তু আমরা উত্তর দেবার আগেই তিনি সভাস্থল থেকে বয়কট করে বেরিয়ে গেলেন। এটা তাঁর উচিত হয়নি।’
এদিকে বর্ধিত সভায় হট্টগোলের পরদিনই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে সংগঠনের প্রত্যেক কার্যক্রমের ব্যানার নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। সোমবার (১৩ মে) জেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ দিদারুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ জহুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জেলার আওতাধীন প্রত্যেক উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, আহবায়ক/ যুগ্ম-আহ্বায়কদের জানানো যাচ্ছে যে, সংগঠনের যেকোন সভা, সমাবেশ করার পূর্বে ব্যানার, ফেস্টুন করার আগে জেলা যুবলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি নিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে“।