সড়ক বাতির আলোয় আলোকিত হলো চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভা। পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় আভ্যন্তরীণ সড়কে আলো ছড়াচ্ছে পাঁচ শতাধিক সড়ক বাতি।
জানা যায়, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এবং চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি’র প্রচেষ্টায় ২০১৭ সালে দোহাজারী ইউ.পিকে পৌরসভায় উন্নীত করে সরকার। এরপর ২০১৯ সালে দোহাজারী পৌরসভার তৎকালীন প্রশাসক ও চন্দনাইশ উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী অফিসার আ.ন.ম বদরুদ্দোজা পুরো দোহাজারী পৌর এলাকাকে আলোকায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর দরপত্র আহবানের পর ১৫ ডিসেম্বর কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পৌরসভার রাজস্ব তহবিলের অর্থায়নে ৬৬ লাখ ৩৬ হাজার ৬শত ৮৯ টাকা ব্যয়ে দোহাজারী পৌরসভার আভ্যন্তরীন কয়েকটি সড়কে ১২টি মিটার বোর্ডের আওতায় ৫২০টি বাতি স্থাপন করা হয়। দেড় বছর পর্যন্ত বাতিগুলো জ্বললেও দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনায় অকেজো হয়ে যায় বেশিরভাগ বাতি। এরপর দীর্ঘ দুই বছর পর্যন্ত আঁধারেই ডুবে থাকে পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড।
পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ছয় বছর পর গত বছরের ১৭ জুলাই প্রথমবারের মত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ মোহাম্মদ লোকমান হাকিম নির্বাচিত হন। ২৬ জুলাই সরকারি গেজেট প্রকাশের পর ১০ আগস্ট শপথ গ্রহণ শেষে ১৭ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের পর পৌরবাসীর রাতের বেলায় নির্বিঘ্নে চলাফেরা করার পাশাপাশি চুরি-ডাকাতি ও অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধের লক্ষ্যে অকেজো সড়ক বাতিগুলো পরিবর্তন করে নতুন বাতি লাগানোর মাধ্যমে পৌর এলাকাকে আলোকিত করার উদ্যোগ নেন নবনির্বাচিত মেয়র আলহাজ মোহাম্মদ লোকমান হাকিম। দুই বছর পর সড়ক বাতির আলো ফিরে পাওয়ায় খুশি মানুষ। তবে যে সমস্ত এলাকায় এখনও সড়ক বাতি স্থাপন হয়নি সেই এলাকাগুলোতে সড়ক বাতি স্থাপনের দাবি জানান স্থানীয়রা।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের কিল্লাপাড়া এলাকার জাহেদ হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ী জানান, “সড়ক বাতিগুলো যখন লাগানো হয়েছিলো তখন আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম। দেড় বছরের মাথায় বাতিগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় সড়কে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় আশাহত হয়েছি। সড়কগুলোতে রাতের পরিবেশ থাকতো শুনশান। সন্ধ্যার পর অন্ধকার রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে ভয় পেতো বিভিন্ন বয়সের মানুষ। নতুন করে সড়ক বাতি স্থাপনের ফলে এলাকায় চুরি-ডাকাতি, জুয়াসহ নানা অপরাধ প্রবণতা কমবে। রাতের আঁধারে মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারবে।”
আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন হিরু বলেন, “পৌরসভার বেগম বাজার এলাকায় প্রধান সড়কে বাতি থাকলেও পৌরসভার উদ্যোগে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আরসিসি ঢালাই করা আভ্যন্তরীন সড়কটি অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে। এই সড়কে ১০টি বাতি লাগালে বেগম বাজার এলাকাবাসী রাতের বেলায় নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে।”
এব্যাপারে দোহাজারী পৌরসভার মেয়র আলহাজ মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, “পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের আভ্যন্তরীন সড়কগুলোতে মানুষের চলাচলের রাস্তায় বৈদ্যুতিক আলোর কোন সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে অন্ধকারে চলাফেলা করতে জনসাধারণকে অনেক অসুবিধায় পড়তে হতো। সন্ধ্যা হলেই বিভিন্ন এলাকায় একপ্রকার ভূতুরে পরিবেশ তৈরি হতো। দোহাজারী পৌরসভাকে আধুনিক রুপে রূপায়িত করতে প্রাথমিকভাবে পুরনো লাইনের অকেজো বাতিগুলো পরিবর্তন করে নতুন বাতি স্থাপন করা হচ্ছে। যেসব সড়কে এখনো সড়কবাতি স্থাপন করা হয়নি সেগুলোতে পর্যায়ক্রমে তা স্থাপন করা হবে। পৌরসভাকে শতভাগ আলোকিত করার জন্য আমরা কাজ করছি। যাতে পৌর নাগরিকরা রাতের বেলায়ও স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারেন।”