নতুন নয়, কালুরঘাটের পুরোনো সেতুতেই হচ্ছে ওয়াকওয়ে

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর১৯৩০সালে কালুরঘাট রেলওয়ে সেতু নির্মাণ করে ব্রুনিক এন্ড কোম্পানি ব্রিজ বিল্ডার্স হাওড়া নামের একটি প্রতিষ্ঠান।সেতুটি নির্মাণের পর ১৯৫৮ সাল থেকেই রেলের পাশাপাশি সেতুর উপর দিয়েই সড়ক পথের যান চলাচল শুরু হয়। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা, পটিয়ার উপজেলার একাংশ ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখ লাখ মানুষের চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশদ্বার এই ৬৩৮ মিটার সেতুটি এর আগে দুই বার সংস্কার করা হয়েছিল। ২০০১ সালে এই সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০১১ সালে সেতুটিকে চুয়েটের একদল গবেষক আরও একবার ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেন। কিন্তু দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ ও কক্সবাজার – ঢাকার মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বুয়েটের পরামর্শে সেতুটি সংস্কার করা হচ্ছে। সংস্কারের জন্য গত বছরের( ১লা আগষ্ট) থেকে সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজের কারণে গত (১লা আগষ্ট)থেকে কালুরঘাটে যানবাহন ও জনসাধারণ পারাপারে দু’টি ফেরি চালু থাকলেও অনেক সময় চলছে একটি। নদীর দুই তীরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকছে গাড়ি। ফলে দুই তীরেই কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।ঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছতে না পারা মানুষের পাশাপাশি রোগীদের দুর্ভোগের চিত্রও দেখা গেছে সেতু এলাকায়। রাত বারোটার পরে চলছে না দুইটির একটিও ফেরি মানুষ পড়ছে বিপাকে সে সময় বোয়ালখালীর জনসাধারণকে নৌকা দিয়ে প্রতিজন ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।বোয়ালখালীবাসীর দাবী ছিলো পুরাতন সেতু সংস্কার না করে কর্ণফুলী নদীর উপর নতুন একটি সেতু নির্মাণ হবে। নতুন একটি সেতু না হলে বোয়ালখালীবাসীর দুঃখের অবসান হবে না। চট্টগ্রাম -৮ আসনের সংসদ সদস্যরা প্রতি সংসদ নির্বাচনে বোয়ালখালীবাসীকে আশ্বস্ত করতো নির্বাচনে নির্বাচি়ত হলে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করা হবে। সেতু নির্মাণের আশ্বাস বোয়ালখালীবাসীর স্বপ্নে থেকে গেলো।তাই শেষ বারের মতো বোালখালীবাসী ও সুশীল সমাজ স্বপ্ন দেখছেন চট্টগ্রাম -৮ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নিবেন।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল)সকালে কালুরঘাট সেতু পরিদর্শন ও রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, কালুরঘাট সেতুটি সংস্কার কাজের জন্য গত বছরে (১লা) আগস্ট থেকে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে সেতুতে রেলপথ সংস্কারের পর কক্সবাজার – ঢাকার মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় রেলওয়ে।

সেতুটির এক পাশ দিয়ে মানুষ হেঁটে পারাপারের জন্য সেতুর উপর নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে ওয়াকওয়ে সড়ক পথ।যা সেতুটিতে আগে ছিলো না। ওয়াকওয়ে সড়ক পথ নির্মাণের ফলে জনসাধারণ সেতুর মূল সড়ক দিয়ে পায়ে হেঁটে পারাপার না করে নিরাপদে ওয়াকওয়ে সড়ক পথ দিয়ে পায়ে হেঁটে সেতু পারাপার হতে পারবে। এছাড়া আগে সেতুর মাঝে রেল ট্র্যাক থাকায় কার্পেটিং সহজেই ওঠে যেতো এবং রেল ট্র্যাকের অভ্যন্তরে পানি জমে পাতের ক্ষতি হতো। এখন সেতুটিতে বিদ্যমান পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ রাখা হচ্ছে। এরপর ওই কংক্রিট ঢালাইয়ের ওপর পিচ দিয়ে সেতুর উপর সড়কপথ নির্মাণ করা হবে। এরপর যান চলাচলের উপযুক্ত হলে উন্মুক্ত করা হবে এই একমুখী কালুরঘাট পুরাতন সেতুটি। তবে সেতুর উপর এই কাজ সম্পন্ন হতে আরও এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশলীরা।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, সেতুটির এক পাশ দিয়ে মানুষ হেঁটে পারাপারের জন্য সেতুতে নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে ওয়াকওয়ে সড়ক পথ।

বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী সেতুটির কয়েকটি ধাপে চলমান সংস্কার কাজের মধ্যে রেল ট্র্যাকের কাজ ও সংস্কার সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন