তিন মাসের জন্য বন্ধ কালুরঘাটের কপাট, চলবে ফেরি

সংস্কার কাজের নিমিত্তে তিন মাসের জন্য বন্ধ থাকবে বোয়ালখালী, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের একসময়ের একমাত্র চলাচলের মাধ্যম কালুরঘাট সেতু। ১ আগস্ট থেকে ৩ মাস বন্ধ থাকবে কালুরঘাট সেতু। সংস্কার কাজের জন্য ১ আগস্ট থেকে পরবর্তী ৩ মাস বন্ধ থাকবে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট সেতুটি।

বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্ব) প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞার স্বাক্ষরিত ২৪ জুলাই এ বিষয়ে একটি নোটিশ জারি করে।

নোটিশে বলা হয়, আগামী সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বা অক্টোবরের শুরুতে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেল পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ কারণে সেতুটি মেরামত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বর্তমানে সেতুটি ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে রেল চলাচলের জন্য ব্যবহৃত ভারী লোকোমোটিভের বোঝা বহন করতে সক্ষম নয়। সেতুটির উভয় পাশের ডেক ও লোহার বেড়া জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় এবং উপরিভাগে গর্তের সৃষ্টি হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি হয়।

এদিকে কালুরঘাট কর্ণফুলীর নদীতে ফেরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেতুর সংস্কার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত টোল সার্ভিসের মাধ্যমে ফেরি চালু থাকবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে এই কালুরঘাট সেতুটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে ঘোষণা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে। পুরনো কালুরঘাট সেতুকে সংস্কার করে চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানোর উপযোগী করে তোলার জন্য বুয়েটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কালুরঘাট সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে ১০টন ভারী ইঞ্জিন চলাচল করে। সেতু পার হওয়ার সময় গতি থাকে সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। তবে আগামীতে কক্সবাজারগামী ইঞ্জিনের ওজন হবে ১২-১৫ টন। ট্রেনের গতি হবে ৮০-১০০ কিলোমিটার। এ কারণে সংস্কার ছাড়া দোহাজারী-কক্সবাজার রেল যোগাযোগের সুফল মিলবে না বলে মনে করছেন রেল কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী নতুন নকশায় কালুরঘাট সেতু তৈরিতে সম্মতি দিয়ে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৩১ সালে রেল সেতু হিসেবে নির্মিত এবং ১৯৬০ সালে সেতু ও সড়ক হিসেবে স্থাপতি কালুরঘাট সেতু নতুন করে নির্মাণের জন্য নানা সময়ে উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। ফলে এখন একপ্রকার বাধ্য হয়েই তা সংস্কার কাজ করতে হচ্ছে। নতুবা দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারিত রেল যোগাযোগের পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে।

এদিকে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর অভিমত, আগে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ না করে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল সেবা চালুর পরিকল্পনা সংশ্লিষ্টদের অপরিপক্ষতারই বহিঃপ্রকাশ। এটা একপ্রকার ডিম আগে না মুরগি আগে জাতীয় প্রশ্নের অবতারণা করে।

আরও পড়ুন