শীলকূপ টাইমবাজার-গন্ডামারা সংযোগ সড়কের টেন্ডার হওয়ার এক বছর পর সড়কের কাজ শুরু হলেও এখনো কাজই শেষ করতে পারেনি কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন। কাজের তৃতীয় ধাপ শেষ হলেও সড়কের একতৃতীয়াংশ কাজই শেষ না করেই নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে লাপাত্তা ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়ত করা পথচারীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘দীর্ঘ সড়কে দু’পাশে বর্ধিত অংশের মাটি কেটে স্যান্ড ফিলিং করেন। মাঝপথে কাজ বন্ধ করে চলে যান। হাতে-গোনা কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে মন্থরগতিতে কাজ চলায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়ন ও গন্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম গন্ডামারার সাথে বাঁশখালী প্রধান সড়কের একমাত্র সংযোগ সড়ক এটি। দীর্ঘ সড়কজুড়ে আবারো সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। ধূলাবালির নরক রাজ্যে আমাদের জনজীবন সীমাহীন দুর্ভোগে। স্বাভাবিকভাবে হাটাঁ-চলাফেরা করতে পারিনা আমরা। কবে নাগাদ সড়কের কাজ শেষ হবে এমনটি জিগ্যাসা স্থানীয়দের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর এলজিইডি চট্টগ্রামের আওতায় মেসার্স রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে পৌনে ৪ কোটি টাকা। কাজ শুরুর একবছর অতিক্রম হলেও সড়কের একতৃতীয়াংশ কাজই শেষ করতে পারেনি ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শীলকূপ টাইমবাজার ও পশ্চিমে গন্ডামারা ইউনিয়নের বৃহত্তম জনগোষ্ঠির সঙ্গে প্রধান সড়কের সাথে জনগণের সহজে যাতায়াতের সুবিধার্থে টাইমবাজার থেকে গন্ডামারা ব্রিজ পর্যন্ত সড়ক বর্ধিতকরণসহ পানি নিষ্কাশন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের দু’পাশ বর্ধিতকরণে সড়কটির পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর এর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় পৌনে ৪ কোটি টাকা। অভিযোগ রয়েছে, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারীতে সড়কের কাজ শুরু করেন। দু’পাশে বর্ধিত অংশের মাটি কেটে স্যান্ড ফিলিং করেন। মাঝপথে কাজ বন্ধ করে চলে যান। আবার আসেন। দীর্ঘ এক বছর অতিক্রম হলেও কাজের গতি নেই।
বর্তমানে সড়কটির নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলায় শীলকূপ-গন্ডামারা দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া এ সড়ক দিয়ে যাতায়ত করা বিভিন্ন স্কুল-মাদরাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও পোহাতে হচ্ছে নানা দুর্ভোগ। ধূলাবালিতে অতিষ্ট সাধারণ পথচারিও। ধূলাবালির কারণে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারে না। প্রতিনিয়ত ধূলাবালির কারণে স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
শীলকূপ ইউপির চেয়ারম্যান কায়েশ সরওয়ার সুমন বলেন, ‘সড়কটি টাইমবাজার হয়ে গন্ডামারা পর্যন্ত দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার দূরত্বের সাথে বিশাল জনগোষ্ঠির যোগাযোগের মাধ্যম। এ সড়ক দিয়ে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, মনকিচর বড় মাদরাসাসহ বেশ কয়েটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চরম দূর্ভোগে যাতায়ত করে। কাজ শুরুর পর এ পর্যন্ত বেশকয়েকবার চলে যায় তারা। গত একসপ্তাহ হয়ে গেল তাদের আর দেখা নাই। দ্বিতীয় ধাপের বিল না পাওয়াতে তারা কাজ ছেড়ে চলে গেছে বলে জানা যায়।’
ঠিকাদার কামাল হোসেনের মেসার্স রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সাইড ইঞ্জিনিয়ার মাহাবুব কে বেশ কয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী (এল জি ই ডি) কর্মকর্তা কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের একটা বিল বকেয়া ছিল। তাই তারা মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দেয়। বিলটা প্রসেস হয়েছে। খুব শিগ্রই অসমাপ্ত কাজ শেষ করা হবে বলে জানান তিনি।’