সরল ইউনিয়ন। বাঁশখালী উপজেলার মধ্যাংশে এটির অবস্থান। সরল ইউনিয়ন চট্টগ্রামের লোক-কাহিনী মনু মিয়া-মালকা বানুর নায়িকা-চরিত্র মালকা বানু চৌধুরীর জন্মস্থান। ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত এ ইউনিয়নের অবকাঠামোগত উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়নি বললেই চলে। এ ইউনিয়নের একটি গ্রাম ‘সরল’। গ্রামের মুহুরি পাড়ার অভ্যন্তরে প্রায় এক কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কটির এখন জীর্ণদশা। দীর্ঘ তিনবছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকার প্রায় আড়াইশো পরিবার। দেড় থেকে দুই হাজারের অধিক লোকজনের যাতায়াতের মাধ্যম মুহুরিপাড়া সড়কটি। সড়কটির দু’পাশে পুকুর। পাড় ভেঙে সড়কটি পুকুরে বিলীন হয়ে যায়। গ্রামের লোকজনের চলাচলের পথটিই হয়ে পড়ে ছোট একটি খাল।
জানা যায়, সরলের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মুহুরি পাড়া সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দের কারনে সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় সড়কের প্রায়ই অংশ। সড়কের প্রায় একশো মিটার দূরত্বের অংশ পুকুরে বিলীন হলে হাঁটু পানিতে চলাচল করতে হয় লোকজনদের। শিশু-কিশোরদের স্কুল-মাদরাসায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে এই এলাকার শিক্ষার্থীরা স্থানীয় সরল আমিরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরল মদিনাতুল উলুম মাদরাসা, নয়াপাড়া আদর্শ ইবতেদায়ী মাদরাসায় যাতায়ত করে। সড়ক সংস্কারে এলাকার লোকজন জনপ্রতিনিধির কাছে বারবার ধর্ণা দিলেও বাজেট নাই বলে এড়িয়ে যায়। ফলে রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটু পানি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে চলাচল স্বাভাবিক করতে সড়কের উপর স্থাপিত হয় বাঁশের সাঁকো।
স্থানীয় আহমদুর রহমান নামে একজন বলেন, ‘মুহুরি পাড়া সড়কের চলাচলের প্রায় একশো ফুট দৈর্ঘ্য ভেঙে পুকুরে বিলীন হয়ে খালে পরিণত হয়। এতে সর্বসাধারণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে সেবামূলক সংগঠন ‘সরল দা’ওয়াতুন্নবী (সা.) সংস্থা’র সহায়তায় বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। সাঁকোতে কোনরকম সড়ক পার হতে পারলেও দুর্ঘটনার শঙ্কা কমেনি এলাকাবাসীদের।’
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন আসলে জনপ্রতিনিধিরা ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চায় এলাকায়। যতবার ভোট চাইতে আসছে ততবার বলেছে রাস্তা বেঁধে দিবে এবং অবকাঠামোর উন্নয়ন করবে, কিন্তু নির্বাচনের পর তারা যেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সড়কটি সংস্কারে বারবার ধর্ণা দিলেও সন্তোষজনক কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। খুব দ্রুত সময়ে সড়কটি রক্ষায় ও সংস্কারে এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লীষ্ট কর্তপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, ‘গ্রামের মুহুরি পাড়া সড়কটি ছাড়াও আরও কয়েকটি সড়কের অবস্থা বেহাল। এ সড়কের যে অংশ পুকুরে বিলীন হয়েছে তার বিষয়ে চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। এ মুহূর্তে বরাদ্দ না থাকায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
সরল ইউপির চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, ‘এক কিলোমিটার দীর্ঘ মুহুরি পাড়া সড়কটির প্রায় একশো মিটার দূরত্বের অংশে দু’পাশে পুকুর। বর্ষায় পুকুরের পাড় ভেঙে সড়কটি পানিতে তলিয়ে যায়। স্বল্প বাজেটে এ কাজটি করা সম্ভব না। তাই সড়কটির স্টিমিট প্রস্তুত করে উপজেলা প্রকৌশলীর নিকট পাঠানো হয়েছে। বর্ষা চলে গেলে সড়কটির সংস্কার কাজ হবে বলে জানান তিনি।’