শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল পলোগ্রাউন্ডে বিএনপি’র সফল সমাবেশ
শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল পলোগ্রাউন্ডে বিএনপি’র সফল সমাবেশ পথে পথে শত বাধাকে অতিক্রম করে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। কয়েক লাখ মানুষের গগণবিধারী শ্লোগান প্রমাণ করে দেয় তারা হাসিনা সরকারকে আর দেখতে চায় না। বাধা ডিঙিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হয়ে জানান দিলো মৃত্যুর পরোয়া নেই, নেই কোন পিছুটান। জুলমবাজ এ সরকারকে বিদায় নিতে হবেই এখনই। মিছিলে মিছিলে কানায় কানায় পরিপূণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাধা দিয়েও বাঁধভাঙ্গা জোয়ারকে থামাতে পারেনি সরকার। পুলিশ আর দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা, গাড়ী রোধ, চেকিংয়ের নামে হয়রানি, আগের রাত থেকে গ্রেপ্তার অভিযানসহ নানা কুটকৌশল করেও সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রদর্শনের জনস্রোতকে ঠেকানো যায়নি। ফলে চট্টগ্রাম থেকেই সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে ওঠেছে ।
বুধবার (১২ অক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে আয়োজিত বিএনপি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণের রায়কে ভয় পায় বলেই তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রচলন করেছে। উন্নয়নের নামে হরিলুট করে দেশের বারোটা বাজিয়ে এখন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বতে জলাঞ্জলি দিয়ে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে বিদেশীদের নিকট ধর্ণা দিচ্ছে। দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নিষেধাজ্ঞা দেশের ভাবমূর্তিই ক্ষুন্ন করেনি সারাবিশে^ বাংলাদেশকে একটি কলঙ্কজনক ও দুর্নীতিগ্রস্থ রাষ্ট্র হিসেবে নতুন পরিচয় দিয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভোট চোর হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পরিচিতি লাভ করেছে। অর্থ পাচার, গুম, খুন, দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিতে দেশবাসীকে অতীষ্ঠ করে তুলেছে বলেই মানুষ আজ শেখ হাসিনা বিরোধী যেকোন আন্দোলনে শরীক হচ্ছেন। জ¦ালানী, বিদ্যুৎ, গ্যাস, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদ করতে গেলে পাখির মতো গুলি করে জনগণকে মেরে ফেলতেছে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, পদত্যাগের আর কোন সময় নেই। দফা-দাবি একটাই। শেখ হাসিনার এখনই পদত্যাগ। তার অধীনে কোন নির্বাচন নয়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত মহাসমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। নগর বিএনপি’র সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর ও আবু সুফিয়ানের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খোন্দাকার মোশারফ হোসেন, বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় এবং স্থানীয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
মূল সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরু হলেও সকাল ১০টা থেকেই সমাবেশমুখী মানুষের ঢল নেমেছিল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই পুরো পলোগ্রাউন্ড ময়নদান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে আশে পাশের সিআরবি, রেল লাইন, কদমতলী, রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাবসহ পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরণের ব্যানার, ফেস্টুন, ক্যাপ, গেঞ্জি পরিহিত সমাবেশমুখী মিছিলের কারণে পুরো নগরীর যান চলাচল স্তব্দ হয়ে যায়। নগরীর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশী এবং সরকার দলীয় সমর্থকদের বাধায় সমাবেশে আসতে অনেককে বেগ পেতে হয়েছে। আগের দিন রাতে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশী অভিযানে অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলেও দলটির দাবি।