একসময় মহাকাশে আমাদের কোন অস্তিত্ব ছিলনা, কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপন করে ডিজিটাল প্রযুক্তির মধ্যেদিয়ে আমরা মহাকাশ জয় করেছি। তাছাড়া চট্টগ্রামে নদীর নীচে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম টানেল স্থাপনের মধ্যেদিয়েও আমরা বিজয়ের নিশান উড়িয়েছি। আজকে মাথাপিছু আয় থেকে শুরু করে, এনআইডি, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জুম মিটিং, ইএফটি, আইবাস এবং ক্যাশলেস ইত্যাদি ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহরের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আজকের তরুণ সমাজ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে না পারলেও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনিমার্ণের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে পারে।
শনিবার নগরীর জেলা শিল্পকলা একডেমিতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান’র সভাপতিত্বে বিভাগীয় কমিশনার প্রধান অতিথির এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে রেঞ্জ ডিআইডি নুরেআলম মিনা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধ মোঃ নূর উদ্দিন বক্তৃতা করেন। এসময় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
এবারের বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের আর্দশ, চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং বিজয় দিবসের তাৎপর্য।
অনুষ্ঠান শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা শিশু একাডেমি আয়োজিত সাংস্কৃতিক ও চিত্রাংকন প্রযোগীতায় বিজয়ীদের মাঝে বিভাগীয় কমিশনার পুরস্কার বিতরণ করেন।
বিভাগীয় কমিনার বলেন, একটি রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে চারটি উপাদান ভূখন্ড, সরকার, জনগণ এবং সার্বভৌমত্বের প্রয়োজন রয়েছে। স্বাধীনতার আগে আমাদেরও তিনটি উপাদান ছিল কিন্তু সার্বভৌমত্ব ছিলনা। এ সার্বভৌমত্ব বা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আনার জন্য আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছে। স্বাধীনতার অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি এবার আমাদের লক্ষ্য হতে হবে এটিকে রক্ষা করা।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে সমুদ্র বিজয় হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে সুনীল অর্থনীতির কোন বিকল্প নেই। মৎস্যখাত থেকে শুরুকরে, সমুদ্র পরিধি এবং সমুদ্রের নিচে প্রাকৃতিক সম্পদ ও বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন ধরনের কোপ খনন করা হয়েছে। সেগুলো ব্যবহার করে কিভাবে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা যায় সে ব্যাপারে আমাদের মনোযোগী হওয়া উচিত।
রেঞ্জ ডিআইজি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের তরুণ সমাজ মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশকে স্বনির্ভর করার ক্ষেত্রে তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সুদৃঢ়। নিজেদের করতে হবে স্মার্ট এবং দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নিজেদের সংশ্লিষ্ট করা। জাতির পিতার স্বপ্ন সোনার বাংলা বিনির্মাণ ও তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের সবোর্ত্তম চেস্টা করে যেতে হবে।
সভাপতি তার সমাপণী বক্তব্যে বলেন, আজকে পাকিস্তান আর বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন দিকদিয়ে তুলনামূলক ব্যবধান অনেক। আমরা যদি দেখি আমাদের জিডিপি তাদের তুলনায় অনেক এগিয়ে গেছে। তাছাড়া মাথাপিছু আয় ও গড় আয়ু তাদের তুলনায় আমাদের অনেক বেশি। মাতৃমৃত্যুর ও শিশুমৃত্যু হার তাদের তুলনায় আমাদের অনেক কম। আমরা এখন অনেক সুখী ও সমৃদ্ধশালী হয়ে গেছি। কিন্তু তারপরেও ১৯৭১ এ পরাজিত শক্তির প্রেতাত্মারা এখনো আমাদের মাঝে আছে এবং তারা সুযোগ পেলে দেশের পরিস্থিতি অস্তিতিশীল করে তোলার চেস্টা করে। তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।