পেকুয়ায় ‘জাফর’হত্যার ঘটনায় ২০ জনের নামে মামলা, নিরাপরাধ ৭জনও আসামী

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বহু আলোচিত ডাকাত জাফর আলম (৬৫) হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৫ নিরাপরাধ ব্যক্তিসহ ২০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

২৭ জুলাই (বুধবার) নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ২০ জনকে আসামি করে পেকুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং ১৪। ওই মামলায় ৭ জন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে,বারবাকিয়া ইউপির সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের পিতা পাহাড়িয়াখালী এলাকার বাসিন্দা জাফর আলম গত ২৫ জুলাই চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলার হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা ৮/১০ জনের একদল সন্ত্রাসী ছনখোলারজুম এলাকায় পরিকল্পিতভাবে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। বনবিভাগের সংরক্ষিত জায়গা দখল বেদখল ও বালু মহালের আধিপত্য নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য জাফর আহমদের ছেলে রমিজ উদ্দিন গংদের বিরোধ থেকে হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে স্থানীরা জানিয়েছেন।

এদিকে নিহত জাফর আলমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আবু জাফরের পুত্র আলমগীর, জমির উদ্দিন, মৃত নুর আহম্মেদের পুত্র আবু জাফর, মৃত আহমদ হোছাইনের পুত্র নাছির উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, আনচার উদ্দিন,মৃত নজু মিয়ার পুত্র বাদশা, রহিমদাদের পুত্র মুছা, মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র রহিমদাদ, মৃত মজু মিয়ার পুত্র রবিআলম,শপি আলমসহ ২০ জনের উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও আছে উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করে।

পুলিশ এজাহার আমলে নিয়ে হত্যা মামলার রেকর্ড করেন। আর এ মামলায় আসামি করা হয়েছে একজন প্যারালাইসিস রোগিকেও। পেকুয়া থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে ১৪ নং আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৭/৮জন নিরাপরাধ ব্যক্তিকেও মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। থানা প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে নানা প্রশ্নের দানা বেঁধেছে।

এদিকে মামলার আসামি মগনামা ইউপির সাবেক সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, আমি দু’বছর ধরে বিছানা থেকে ওঠতে পারছিনা। আমি একজন প্যারালাইসিসের রোগি। দু’বার ষ্ট্রোক করেছি। মৃত্যু পথের যাত্রি। কেন, কি উদ্দেশ্যে আমাকে আসামি করেছে বুঝতে পারছিনা। আল্লাহর ওপর বিচার ছেড়ে দিলাম।

মামলার আরেক আাসামী মগনামা ইউনিয়নের ফজল হোসেনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, একটি চক্র আমাকে আসামি করেছে। বাদি ও থানা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আমাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। ঘটনার সাথে জড়িত ও ভিকটিমকে আমি চিনিওনা। একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের টাকায় বলির পাঠা হলাম।

মামলার আসামী মগনামা বাজার পাড়া এলাকার ফরহাদ খান টিপু, রাহাত আলী পাড়ার মো. মামুন ও শরত ঘোনা এলাকার জোসেফ উদ্দিন বলেন, সব টাকার খেলা। একজন সাবেক চেয়ারম্যানের মোটা অংকের টাকায় আমাদের আসামি করেছে। গত ইউপি নির্বাচনে তার বিপক্ষে ভোট করছিলাম। তিনি টাকা দিয়ে প্রশাসনকেও ম্যানেজ করেছে।

স্থানীয়রা জানায় জাফর হত্যাকান্ড মামলায় অন্তত ৭/৮জন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। ভিন্ন ইউনিয়নের লোকজনকেও আসামি করা হয়েছে। ঘটনা হয়েছে বারবাকিয়া পাহাড়িয়াখালীতে কিন্তু আসামী করা হয়েছে মগনামা, টইটং, শীলখালী, বারবাকিয়া ইউনিয়নে লোকজনকেও।

এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরহাদ আলী বলেন, নিহতের স্ত্রী যেভাবে এজাহার দিয়েছে সেভাবে মামলা রুজু করা হয়েছে। কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি আসামি হলে তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলে অবশ্যই মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হবে।

আরও পড়ুন