মিরসরাইয়ে ৪ পা বিশিষ্ট কন্যা শিশুর জন্ম দিল গৃহবধূ

মিরসরাইয়ে ৪ পা বিশিষ্ট কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে গৃহবধূ নাছরিন আক্তার। উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভার শেফা ইনসান হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোররাতে শিশুটির জন্ম হয়। ওই গৃহবধূ ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার ১ নং বাগানবাজার ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের হাতির খেদা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের বাড়ীর সাইদুল ইসলামের স্ত্রী।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ২ টার দিকে গৃহবধূ নাছরিন আক্তার (১৮) প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ২০৪ নং কেবিনে ভর্তি হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে মঙ্গলবার ভোর ৫ টার সময় হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগে অভিজ্ঞ ডা. মারিয়া কিবতিয়ার তত্বাবধানে ওই গৃহবধূর ৪ পা বিশিষ্ট কন্যা শিশুর জম্ম হয়। শিশুটির ৪ পায়ের মধ্যে ২ টি পা ক্লাব ফুট (মুগর পা) এবং বাকি ২ টি পা অস্বাভাবিক এবং মেরুদন্ড মেনিগোসিল। শিশুটির ওজন ২ কেজি ৮’শ গ্রাম। শিশুটির মা পুরোপুরি সুস্থ্য হলেও শিশুর সামান্য শ্বাস কষ্ট রয়েছে।

গৃহবধূর স্বামী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘২০২০ সালের ১১ মার্চ ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার ১ নং বাগানবাজার ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের হাতির খেদা গ্রামের হানিফ হানিফ কোম্পানীর ছোট মেয়ে নাছরিন আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। একই বছর বিবাহের ৯ মাসের সময় একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় আমার স্ত্রী। কিন্তু সেই শিশুটি ডেলিভারীর সময় মারা যায়। এরপর ২ বছরের ব্যবধানে বারইয়ারহাট শেফা ইনসান এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোরে দ্বিতীয় শিশুর (কন্যা) জন্ম হয়। তবে স্বাভাবিকভাবে ৪ পা বিশিষ্ট শিশুটির জন্ম হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘সন্তান জন্মগ্রহণের পর যেকোন বাবার মুখে হাসি ফুটে। কিন্তু আমার এবং পরিবার ও আতœীয়স্বজন সবার মাঝে দুশ্চিন্তার ছাপ এই অস্বাভাবিক কন্যা সন্তান নিয়ে। আমি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। তাতে পরিবার নিয়ে চলাও কষ্টকর হয়ে যায়। কিন্তু এখন আমি হতাশার মধ্যে আছি আমার কন্যা সন্তানের চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন পড়বে।’

শেফা ইনসান হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগে অভিজ্ঞ ডা. মারিয়া কিবতিয়া বলেন, ‘সোমবার রাত ২ টার দিকে গৃহবধূ নাছরিন আক্তার প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে মঙ্গলবার ভোর ৫ টার সময় ওই গৃহবধূর ৪ পা বিশিষ্ট কন্যা শিশুর জম্ম হয়।’

শেফা ইনসান হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের নবজাতক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এস এ ফারুক বলেন. ‘ এটি আমার চিকিৎসা জীবনে একটি বিরল ঘটনা, যা আগে আমি কখনো দেখিনি। ৪ পা বিশিষ্ট শিশুটির স্বাভাবিকভাবে জন্ম হয়। তবে ৪ পায়ের মধ্যে ২ টি পা ক্লাব ফুট (মুগর পা) এবং বাকি ২ টি পা অস্বাভাবিক এবং মেরুদন্ড মেনিগোসিল। শিশুটির ওজন ২ কেজি ৮’শ গ্রাম। শিশুটির মা পুরোপুরি সুস্থ্য হলেও শিশুর সামন্য শ^াস কষ্ট রয়েছে।’