বঙ্গোপসাগরে ১৬ নৌকা ডাকাতি: বাঁশখালীর ১২ জলদস্যু গ্রেপ্তার

বঙ্গোপসাগরে ১৬টি নৌকা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ১২ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, ডাকাতি করা ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা মুল্যের তিন হাজার ইলিশ মাছ, বিপুল পরিমাণ মাছ ধরার জাল ও ডাকাতিতে ব্যবহৃত নৌকাও জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন বাঁশখালী উপজেলার আনসার মেম্বারের ছেলে আনোয়ার (মূলহোতা), কবির আহমদের ছেলে লিয়াকত (মাঝি), আব্দুল কাদের এর ছেলে মনির, মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে আবুল খায়ের (ইঞ্জিন ড্রাইভার), মৃত আব্বাছের ছেলে নবীর হোসেন, মৃত মুক্তার আহমেদের ছেলে নেজামউদ্দিন, আব্দুল কাদেরের ছেলে হুমায়ুন, হাজী আবুল হাসানের ছেলে সাহেদ, আবু তাহেরের ছেলে সাদ্দাম, মো. ইব্রাহিমের ছেলে আতিক, মো. জহিরের ছেলে এমরান, মৃত ইসলাম মিয়ার ছেলে আমানউল্লাহ।

আজ শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) চন্দাগাঁও ক্যাম্পে বিকেল ৪ টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে সম্প্রতি একটি জলদস্যু বাহিনী সক্রিয় হয়ে নতুন করে দস্যুতা শুরু করেছে এমন অভিযোগ আসছিল। এরই মধ্যে গত ২৭ আগষ্ট সাগরে ৯টি মাছ ধরার বোটে ডাকাতি হয়। এ বিষয়ে র‌্যাব তদন্ত শুরু করে। এরই মধ্যে আমরা জানতে পারি, জলদস্যু বহনকারী একটি বোট সাগরে বিভিন্ন বোটে ডাকাতি করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে গভীর সমুদ্রে ও কুতুবদিয়া চ্যানেল হয়ে বাঁশখালীতে গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালিয়ে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ১টি বোট, ৩ হাজার পিস ইলিশ মাছ, মাছ ধরার বড় জাল, ৩টি ওয়ান শুটারগান, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১৬টি দা-ছুরি, ১টি বাইনোকুলার, ৪টি টর্চ লাইট, ২টি চার্জ লাইট, ২টি হ্যান্ড মাইক, ৭০টি মোবাইল, নগদ ৫ হাজার ৭’শ টাকা উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বোট নিয়ে সাগরে গিয়ে বেশি মাছ না পাওয়ায় বোটের মালিক বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউপি’র আনছার মাঝি বর্তমান ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার তাদের কোন টাকা-পয়সা দেয় না। মাছ ধরতে না পারলে তাদেরকে ডাকাতি করে মাছ নিয়ে আসতে বাধ্য করে। আনছার মেম্বার মূলত নব্য সৃষ্ট এ জলদস্যু বাহিনীর মূল পরিকল্পনাকারী এবং তার ছেলে আনোয়ার সহযোগী দস্যু হিসাবে কাজ করতো। তার দলের মূল্য উদ্দেশ্য ছিল অল্প পরিশ্রমে অধিক মুনাফা লাভ করা। এর জন্যই নিজের সন্তান আনোয়ারকে ডাকাত সর্দার বানিয়ে বোট ডাকাতি করার জন্য সাগরে পাঠায়। তারা এ পর্যন্ত মোট ১৬টি বোট ডাকাতি করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়। গ্রেপ্তার আনোয়ারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে।

র‌্যাব-৭ আরো জানান, এরা বোট ডাকাতির পাশাপাশি জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপন আদায় করতো। এরা তিনটি গ্রুফ একসাথে কাজ করে। এ বাহিনীর একটি গ্রুফ আনচার মেম্বার মূল পরিকল্পনা দেয়। আরেকটি গ্রুফ ডাকাতি করা মাছগুলো আড়তদার চক্রের কাছে বিক্রি করে। একটি প্রভাবশালী চক্র শক্তি প্রয়োগ করে চাঁদা দাবী করে সাগরে জেলেদের হয়রানী করে।

আরও পড়ুন