মা পরপারে-বাবা কারাগারে, শিশু রোহানের জীবন এখন অন্ধকারে

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নে স্বামী জিহাদের হাতে নিহত রাশেদা বেগমের দেড় বছর বয়সী শিশু সন্তান রোহান’র জীবন অনিশ্চিয়তার মধ্য পতিত হয়েছে। মায়ের খুনের অপরাধে বাবা জেলে যাওয়ায় অবুঝ এ শিশুর ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তার স্বজনরা।

জানা গেছে, সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ছোয়াখালী ফেরিঘাট এলাকার মো.জিহাদের সাথে ৩বছর আগে বিয়ে হয় রহমতপুর ইউনিয়নের তালতলী বাজার এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের সানাই সুকানির বাড়ির মৃত জসিম উদ্দিনের মেয়ে রাশেদার সাথে। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে আসে শিশু সন্তান। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগে থাকায় এক পর্যায়ে রাশেদা তার বাপের বাড়ীতে চলে আসেন। সেখানেই বুধবার (১০ আগস্ট) রাতে খুন হন রাশেদা।

রাশেদার বোন শারমিন আক্তার নৃশংস এ হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, প্রতিদিনকার মতো সেদিনও খাওয়া দাওয়া শেষে আমরা যার যার রুমে ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু রাত ১২টার দিকে তার রুম থেকে গোঙ্গানির শব্দ শুনে ছুটে গেলে দেখা রান্না ঘরের দরজা খোলা। এসময় রাশেদা বেরিয়ে এলে তার গলা থেকে রক্ত ঝরছিলো। সে অবস্থায় রাশেদা জানান, জাহেদ তার গলা কেটে পালিয়ে গেছে। পরে রাশেদাকে রক্তাক্ত অবস্থায় স›দ্বীপ মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

খুনের পর জিহাদ পালিয়ে গেলেও পরবর্তীতে জনতার সহায়তায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেন, রাশেদাকে হত্যার অভিযোগে স্বামী মো. জিহাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাশেদার বোন পারভিন বাদী হয়ে মো. জিহাদকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।

এদিকে মা না থাকায় এবং বাবা জেলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে শিশু রোহানের জীবন। রাশেদার বাবাও বেঁচে নেই। দরিদ্র এ পরিবারের জন্য এখন শিশু রোহান একরকম বোঝা বলে মনে হচ্ছে। দাদার বাড়ীর অবস্থাও একই শিশু রোহানের। ফলে অবুঝ এ সন্তানের ভরন-পোষন, লালন-পালন নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। দুই পরিবারের কোথাও আর্থিক নিশ্চয়তা নেই শিশুটির।

সন্দ্বীপের অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন শিশুটির ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের উপদেষ্টা ও মাসিক সজাগ স›দ্বীপ পত্রিকার সম্পাদক প্রভাষক ফসিউল আলম বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক। এমন অবস্থায় শিশুটির দায়িত্ব রাষ্ট্রের নেয়া উচিত। নাহলে শিশুটির ভবিষ্যৎ খারাপের দিকে যাবে।

আরও পড়ুন