সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গা : অরক্ষিত দোহাজারী হাসপাতাল

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী ৩১শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পাকা সীমানা প্রাচীরের উত্তর পূর্ব কোনে আনুমানিক ২০মিটার অংশ বিগত দুই বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও অদ্যাবধি সংস্কার করা হয়নি সীমানা প্রাচীরের ভাঙা সেই অংশ। সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়ে থাকায় হাসপাতাল এলাকা এখন অরক্ষিত। ফলে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে আবাসিক ভবনের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সেবক-সেবিকারা জানমালের ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন।

জানা যায়, বিগত দুই বছর আগে হাসপাতালের উত্তর পূর্ব কোনে সীমানা প্রাচীর ঘেঁষা একটি বড় গাছ ঝড়ের রাতে প্রচন্ড বাতাসে উপড়ে গিয়ে সীমানা প্রাচীরের ওপর পড়ে। এতে সীমানা প্রাচীরের আনুমানিক ২০ মিটার অংশ বিধ্বস্ত হয়। পরবর্তীতে গাছটি কেটে সরিয়ে নিলেও সীমানা প্রাচীরের ভাঙা সেই অংশটি আর মেরামত করা হয়নি। সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়ে থাকায় ভাঙা অংশটি দিয়ে চোরের দল হাসপাতাল এলাকায় অবাধে প্রবেশ করে আবাসিক ভবনগুলোর পানি নিষ্কাশনের পুরনো লোহার পাইপ এবং পরিত্যক্ত ভবনগুলোর জানালার লোহার গ্রীল চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়া গত বছর ১৩ জুন ভোররাতে নার্সেস ডরমেটরিতে সিনিয়র স্টাফ নার্স সুখী প্রভা দেবীর বাসায় চুরি সংঘটিত হয়েছে। চোরের দল তাঁর বাসা থেকে দামি মোবাইল ও নগদ টাকা সহ প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায় উল্লেখ করে ওই দিন চন্দনাইশ থানায় অভিযোগও করেন তিনি।

এ বিষয়ে সিনিয়র স্টাফ নার্স সুখী প্রভা দেবী বলেন, “নার্সেস ডরমেটরিতে আমার বাসা থেকে গত বছর ১৩ জুন ভোররাতে মোবাইল ও নগদ টাকা সহ প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার মালামাল চুরি হয়। এরপর ১৭ জুলাই রাতে আরেকবার চুরির প্রচেষ্টা চালায় দুষ্কৃতকারীরা। তখন আমরা সজাগ ছিলাম বলে ওই দিন কোনমতে চুরি প্রতিরোধ করি। এরপর থেকে আতংকিতভাবে রাত্রিযাপন করছি। অসুস্থ্য শরীর নিয়ে রাতজাগা ও ডিউটিতে এসে রোগীদের সেবা প্রদান করা আমাদের পক্ষে খুবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। নার্সেস ডরমেটরির পেছনে সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়ে থাকায় প্রতিনিয়ত সরকারি বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া মাদকদ্রব্য সেবনকারীদের নিরাপদ আস্তানা হয়ে উঠছে ওই স্থানটি।”

সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়ে থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. আবদুল্লাহ আল ইফরান বলেন, “দোহাজারী হাসপাতালের চার পাশে পাকা সীমানা প্রাচীর দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সীমানা প্রাচীর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় তা আর সংস্কার করা হয়নি।”

এবিষয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মনি কুমার শর্মার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “দোহাজারী হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য চলতি অর্থ বছরে প্রস্তাবনা পাঠানো হলেও তা অনুমোদন হয়নি। আগামী অর্থ বছরে অনুমোদন হবে বলে আশা করি। প্রকল্প অনুমোদন হলে কাজ শুরু করতে পারবো।”

আরও পড়ুন