স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে মিলছে জীবন নাশের হুমকি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামি জামিনে মুক্তি পেয়ে মামলা তুলে নিতে বাদীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। জানা যায়, উপজেলার গুমান মর্দন ইউপি বালুখালী এলাকায় চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে পুকুরের পানি চেষ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রবাসী বাদশা মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে মাহাবুব আলম। এ ঘটনায় আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। সরাসরি হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন ওই ঘটনার একমাত্র আসামি মাহাবুব আলম। আসামী পক্ষের সাথে যোগসাজসে অবৈধ হিসাব মেলাতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ বেলাল অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করতে গড়িমসি করে এবং মামলায় মনগড়া সাক্ষীর নাম উল্লেখ করেন। এসব সাক্ষী ঘটনাস্থলে ছিলনা বলেও প্রশ্ন তুলেন বাদী। পরে আসামী হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়ার কয়েকদিন আগে আসামীর বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

এদিকে দীর্ঘ আট মাস কারাভোগের পর ১০ অক্টোবর জামিনে মুক্তি পেয়ে মামলা তুলে নিতে গত ১২ নভেম্বর, রোববার সকালে বাদীকে হুমকি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করে বাদী সুলতানা রাজিয়া। এঘটনায় তিনি গত ১৫ নভেম্বর, বুধবার চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৪৪ ধারা মোতাবেক নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে অবগত করেন।

হত্যা মামলার বাদী সুলতানা রাজিয়া (৫৫) বলেন, আমার স্বামী বাদশা মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে আসামী মাহাবুব আলম। এই ঘটনায় পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। আসামি ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেও মামলায় চার্জশিট দিতে দীর্ঘ সময় নেয় তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) বেলাল। পুলিশের সাথে আসামি পক্ষের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আসামিকে মামলা থেকে রক্ষা করতে মনগড়া সাক্ষীর নাম উল্লেখ করে আসামি জামিন পাওয়ার ঠিক কয়েকদিন আগে চার্জশিট আদালতে পাঠিয়েছে। পরবর্তী ধার্য তারিখে চার্জশিট শুনানির ঠিক দুই দিন আগে আসামি জামিনে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসে। মাহাবুব এখন মামলা তুলে নিতে আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। ঘটনাটি আমি আদালতে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাদির আইনজীবী এডভোকেট এস.এম. জিল্লুর রহমান বলেন, বর্তমানে এই ভিকটিমের পরিবার এবং যারা এ মামলার সাক্ষী ছিল তাদেরকে খুব বেশি হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে তারা যেন আইনি সহযোগিতা প্রদান করেন।

আরও পড়ুন