চবির চারুকলার শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না দেয়ায় ফটকে তালা, পরীক্ষা স্থগিত

উপস্থিতি কমের কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আন্দোলনরত দ্বিতীয় বর্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এই ঘটনাসহ তিন দফা দাবিতে চারুকলা ক্যাম্পাসের ফটকে তালা ঝুলিয়ে ক্যাম্পাস অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে রোববারের দ্বিতীয় বর্ষের অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষাটি স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

রোববার সকাে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর বাদশাহ মিয়া রোড সংলগ্ন চারুকলা ক্যাম্পাসে তালা দেয় চারুকলার শিক্ষার্থীরা। পরে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা সেখানে গেলে ১০টার দিকে তালা খুলে দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা আরম্ভের দিন ছিল। সেখানে বেশ কয়েকজনকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চারুকলা স্থানান্তরের আন্দোলনের যারা ছিলেন কম উপস্থিতির কারণ দেখিয়ে তাদের পরীক্ষায় বসতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া তাদের দাবি অনুযায়ী, ক্যানটিন চালু ও ক্যাম্পাসের ভেতর েেক শিক্ষক ক্লাব এখনও অপরসারণ করা হয়নি। আন্দোলনে থাকা শির্ক্ষাীদের তিন দফা দাবিগুলো হলো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে দেয়া, ক্যানটিন সুবিধা চালু করা, শিক্ষক ক্লাবটি অপসারণ করে ছাত্রাবাস হিসেবে ঘোষণা করা।

এ বিষয়ে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুর ইকবাল সানি বলেন, ‘আমরা যারা চারুকলা স্থানান্তরের আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলাম, শিক্ষকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে তর্ক বিতর্ক করেছিলাম, তাদের পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়নি। সেই আন্দোলনের জের ধরে আমাদের পরীক্ষা দিতে দেয়া হচ্ছিল না। আমাদের কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে উপস্থিতির হার কম, কিন্তু সেটি হওয়ার কথা নয়। এজন্য আমরা তালা দিয়েছি।“

স্নাতকোত্তর বর্ষের শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি বলেন, ‘অবৈধভাবে ৬ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা আটকে দেয়া হয়। তাদের সিগনেচার শিটে ঘষামাজা করে উপস্থিত কমিয়ে দেয়া হয়েছে, যেটার প্রমাণ এখনও আছে। এটাসহ আরও দুই দফা দাবি নিয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস অবরোধ করে।’

এ বিষয়ে জানতে চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সুফিয়া বেগমকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে। আজকের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। কাল একাডেমিক কমিটির সভা আছে, সেখানে সিন্ধান্ত হবে। দফার বিষয়ে আমি জানি না।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ২ নভেম্বর ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাসবর্জন শুরু করেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। পরে সেই ২২ দফা দাবি মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। আন্দোলনের মধ্যেই গত ২ ফেব্রæয়ারী সংস্কারকাজের জন্য চারুকলা ক্যাম্পাস ও হোস্টেল এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর আরও দুই দফায় বাড়ানো হয় চারুকলা বন্ধের মেয়াদ। সর্বশেষ স্থানান্তর আন্দোলনের ১৮২ দিন পরে ক্লাসে ফেরেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন