দক্ষিণ চট্টগ্রামের মাদকের অভয়ারণ্য পটিয়ার হাইদগাঁও-কেলিশহর

আজ ৩জন গ্রেপ্তার হলেও পালিয়ে গেছে অন্যরা

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলায় মাদকের অভয়ারণ্যখ্যাত পটিয়া উপজেলার পাশাপাশি দুই গ্রাম হাইদগাঁও এবং কেলিশহরের তিন মাদককারবারীকে বিপুল পরিমাণ ছোলাই মদসহ আটক করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২টায় উপজেলার হাইদ গাঁও আশ্রয়ন প্রকল্পের রাস্তা ধরে শালিক পাড়ায় আসলে মদবহনকারী ব্যাটারী রিকশাসহ তাদের আটক করা হয়। তবে সে সময় অন্য মাদককারবারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

আটকৃতরা হলো উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের শফিউর রহমানের পুত্র মো. মহিউদ্দিন (৪০), একই এলাকার মৃত নুরুন নবীর পুত্র সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল হক (৪৫) ও কেলিশহর ইউনিয়নের আবদুল মালেকের পুত্র সাবের আহমদ প্রকাশ সাইফু (৩৫)। পালিয়ে যাওয়া অন্যরা হলেন কারবারি কালু মিয়া ও তার স্ত্রী জোসনা বেগম, পশ্চিম হাইদগাঁও ঝিয়ার পাড়া এলাকার রুবেল।

পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতদের কাছ থেকে ১শ লিটার চোলাইমদ জব্দ করা হয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া এসআই বিল্লাল আখন্দ জানিয়েছেন, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারিরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এই ৩জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চিহ্নিত মাদক কারবারি কালু মিয়া ও তার স্ত্রী জোসনা বেগম, পশ্চিম হাইদগাঁও ঝিয়ার পাড়া এলাকার রুবেলসহ অন্যরা পালিয়ে যায়।

পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার জানিয়েছেন, ছোলাই মদ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবী, হাইদগাঁও-কেলিশহরে মাদকের ব্যবসা এখন ওপেন সিক্রেট। এসব অভিযান লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়। দিনের বেলা লুকোচুরি চললেও সন্ধ্যার পর হাইদগাঁও-কেলিশহর ইউনিয়নে বসে মাদকের হাট। প্রশাসনের নিরবতায় এবং ক্ষমতাশালীদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে চলে মাদকের এ রমরমা বাণিজ্য। এতে করে এই দুই ইউনিয়নের উঠতি বয়সী কিশোর-তরুণ-যুবকরা মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, বেড়েছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ অপরাধ প্রবণতা।

স্থানীয়দের অভিমত, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও সদিচ্ছা থাকলে মাদক নির্মূল কঠিন কোনো বিষয় নয়। কিন্তু তারাও যেমন নিরব, জনপ্রতিনিধিরাও এসবে চুপ। এলাকার সচেতন মানুষদের দাবি, জনপ্রতিনিধি এবং সরকার দলীয় নেতাদের ম্যানেজ করেই চলে মাদক কারবার। এখানে অতি সহজে মিলে চোলাইমদ, ইয়াবা, হেরোইন, গাজা, আইসসহ সকল ধরণের মাদক।

অপরদিকে সচেতন মহলের দাবি, মাদককারবারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তাদেরকে পুরোপুরি বয়কট করতে হবে। মাদকের তৎপরতা চোখে পড়লেই প্রশাসনকে জানাতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রতিরোধে গুটিকয়েক মাদককারবারী এলাকার পরিবেশকে বিনষ্ট করতে পারে না বলেও তাদের দাবি। যেসব রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি মাসোহারা নিয়ে তাদেরকে শেল্টার দেন তাদেরকেও প্রতিহত করতে হবে, সমাজে অবাঞ্চিত করতে হবে। ক্ষমতাসীনদের নাম বিক্রি করে চলমান এ মাদককারবারে এখনই নির্মূল করা না গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে জানা গেছে।

মাদক ব্যবসায়ীদের ছবি এবং বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আসছে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন…………..

আরও পড়ুন