নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, তবু কাগজ আর রঙ পেন্সিলের আঁচড়ে ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর নির্যাতনের দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছে রোহিঙ্গা শিশুরা। এতে বাদ পড়েনি উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান কালে সুখ-দুঃখ, আবেগ-অনুভূতির চিত্র।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিকেলে উখিয়ার ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প চত্ত্বরে তিনটি ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে ‘রোহিঙ্গা শিশুদের চোখে জীবন’ শিরোনামে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (৮ এপিবিএন) এই চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন বলে ৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(মিডিয়া) মো: কামরান হোসেন জানান।
তিনি আরও জানান,পবিত্র ঈদুল আজহার খুশি রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং সৃজনশীল মেধার বিকাশের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে উক্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতা শেষে কমান্ডিং অফিসার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন ৮ এপিবিএন অধিনায়ক মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: রবিউল ইসলাম, খন্দকার আশফাকুজ্জামান ও মো: কামরান হোসেন প্রমুখ।
দিনব্যাপী চিত্রাংকন প্রতিযোগীতায় তিনটি ক্যাম্পের ৫০ জন রোহিঙ্গা শিশু অংশ নেয়। এসময় অংশগ্রহণকারীদের অভিভাবক ও বিভিন্ন ক্যাম্পের মাঝিসহ উৎসুক সাধারন রোহিঙ্গারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগিতার বিজয়ী ক্যাম্প-১১, ব্লক এ/৩ এর মোনাফ খান জানান, ‘আমরা মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পরিবারের সাথে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছি। কিভাবে সেদেশের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের গণহত্যাসহ নির্মম নির্যাতন চালিয়ে ঘর-বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে সহায় সম্বল লুটে নিয়েছে চিত্রে সেটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
এছাড়াও বেশ ক’জন প্রতিযোগীর চিত্রে রাখাইন থেকে বিতাড়িত হয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান কালীন সুখ দুঃখের চিত্রে ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি তাদের আবেগ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ৮-এপিবিএনের অধিনায়ক মো.সিহাব কায়সার খান বলেন, চিত্র অংকনের মাধ্যমে শিশুর মানুষিক বিকাশ ঘটে ও চাপ কমে। সেটা মাথায় রেখে এখানে আশ্রিত রোহিঙ্গা শিশুদের হতাশা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। রোহিঙ্গা শিশুরা তাদের স্বদেশের স্মৃতিময় আবেগ অনিভূতি গুলো দারুন ভাবে ফুঁটিয়ে তুলেছে। আগামীতে এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।