রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিশুদের নিয়ে ঘুড়ি উৎসব

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের সীমানায় অবরুদ্ধ জীবনে এক ফালি খুশির রঙিন আকাশের সন্ধান পেয়ে ঈদ আনন্দ মেতে উঠেছিল একদল রোহিঙ্গা শিশু-কিশোর। আর এ আনন্দের দেখা মিলে উখিয়া উপজেলার ১৯ নম্বর ক্যাম্পের ঘোনার পাড়া নির্মাণাধীন পুলিশ ক্যাম্প মাঠে ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত ‘ঘুড়ি উৎসবে’। ভিন্ন আয়োজনে ঈদ উদযাপনের এ উৎসব ঘিরে ঢল নেমেছিল কয়েক শত রোহিঙ্গা শিশুর। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ঘুড়ি উৎসবের এ আয়োজন করে।

শরণার্থী শিবিরে সবুজ পাহাড়ি পাদদেশে নীল আকাশে উড়ছে বাজপাখি, চিল, প্রজাপতি, হুতুমপেঁচা ও বাঘসহ আরও কত প্রাণী। আর সেই দৃশ্য শিশু-কিশোরসহ প্রাণভরে উপভোগ করে উৎসবে অংশ নেন রোহিঙ্গারা। তবে এগুলো সত্যিকারের প্রাণী নয়, প্রাণীর আদলে তৈরি ঘুড়ি।

ঘর তাদের কেড়ে নিয়েছে, কেড়ে নিয়েছে দেশ, নাগরিক পরিচয়, কিন্তু আকাশ কি কেড়ে নেয়া যায়? তাইতো নিজ দেশ ছাড়া রোহিঙ্গা শিশুদের এক আকাশ ঘুড়ি অধিকারে নেয় বিকেলের উচ্ছ্বাস। ঈদুল আজহায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আয়োজিত ঘুড়ি উৎসবে অংশ নিয়ে রোহিঙ্গা শিশু কিশোরেরা বলছে, তারা চায় নিজ দেশ মিয়ানমারের আকাশে ঘুড়ি উড়াতে। ঈদের এ আনন্দ সেইদিনই পূর্ণতা পাবে। তারপরও রোহিঙ্গা শিশুরা খুবই খুশি পরভূমে অবরুদ্ধ জীবনের এ আয়োজনে ঘুড়ি উড়াতে পেরে।

উখিয়া ক্যাম্প ১৯ এর মসজিদুল মোহাজেরিনের প্রধান ইমাম শাহে আলম বলেন, আশ্রিত জীবনে এ আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানায়। এ উৎসব রোহিঙ্গা শিশুদের নৈতিকতা গঠনে ভূমিকা রাখবে। এর ফলে রোহিঙ্গা শিশুদের ঈদের খুশি বাড়িয়ে দিয়েছে।

উখিয়াস্থ ৮ এপিবিএন অধিনায়ক সিহাব কায়সার খান জানান, ঈদুল আজহার আনন্দ ভাগাভাগি করতে রোহিঙ্গাদের মাঝে এই খুশি ছড়িয়ে দিতে এই আয়োজন করা হয়েছে। শতাধিক রোহিঙ্গা শিশু ঈদ উদযাপনে ঘুড়ি উৎসবে অংশ নেয়। মূলত নিজেদের দেশ আর শৈশব স্মৃতির স্মরণ আর কিছুটা হলেও উচ্ছ্বাসের রং ছড়াতে এই উদ্যোগ।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৮ এপিবিএন এর উদ্যোগে তিনদিনের কর্মসূচির মধ্যে রোববার বিকেলে চলে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন, সোমবার দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হয় চকলেট বিতরণ ও খেলাধূলার আয়োজন। আর তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (১২ জুলাই) রোহিঙ্গা শিশুদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও পুরুস্কার বিতরণের মাধ্যমে কর্মসূচীর সমাপ্তি ঘটবে।

আরও পড়ুন