কক্সবাজারের পেকুয়ার উজানটিয়ায় টহলরত নৌ-পুলিশের তিন সদস্যর ওপর পোনা আহরণকারীদের হামলার ঘটনায় থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এ মামলা তদন্ত করার জন্য নৌ-পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রবিবার (৩ জুলাই) বেলা ১২ টার দিকে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন তদন্ত কমিটির প্রধান নৌ-পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।
এ সময় সাথে ছিলেন পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার, উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম, মহেশখালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি বিকাশ চন্দ, পেকুয়া থানার এ এস আই শাহ আলম, উজানটিয়া ইউপির সদস্য সাইফুল ইসলাম, শরিয়ত উল্লাহ, জামাল উদ্দিনসহ স্থানীয়রা।
এ সময় তদন্ত কমিটির প্রধান নৌ-পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথা বলে ঘটনার স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। মামলায় নিরহ ব্যক্তিদেরকে বাদ দেওয়ার জন্য দাবী তুললে দাবীর মূখে তদন্ত কর্মকর্তা নিদোর্ষ ব্যক্তিদেরকে মামলা থেকে বাদ দিবেন বলে আশস্ত করেন।
উল্লেখ, ১ জুলাই (শুক্রবার) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পেরাসিঙ্গা পাড়া এলাকায় এস আই অচিন্ত কুমার দের নেতৃত্বে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির একটি টিম মাতামুহুরি নদীর উজানটিয়া নদীতে চলমান মৎস্য সপ্তাহের বিধিনিষেধ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় টহল দেয়। এ সময় পেরাসিঙ্গা পাড়ার ছৈয়দ আহমেদের পুত্র মাহামদ আলম, মাহামদ আলমের পুত্র আনসারসহ কয়েকজন রেনু পোনা আহরণকারী সাগর থেকে রেণু পোনা আহরণ করে বেড়িবাঁধের উপর রেণু পোনা ছানি করে গননা করার সময় তাদেরকে আটক করে রেণু পোনা ধরার জাল ও বাঁশ জব্দ করে নিয়ে যেতে চাইলে পোনা আহরনকারীদের সাথে নৌ-পুলিশের মধ্যে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির এক পর্যায়ে এস আই অচিন্ত কুমার দে (৫৩), পুলিশ সদস্য সাজ্জাদ হোসেন(৩৭), রাসেল(২৯) আহত হয়।
পেকুয়া থানা পুলিশ আহতদেরকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এদিকে এ ঘটনায় এস আই অচিন্ত কুমার দে বাদী হয়ে উজানটিয়ার পেরাসিঙ্গা পাড়ার ছৈয়দ আহমেদের পুত্র মাহামদ আলমকে প্রধান আসামী করে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে পেকুয়া থানায় মামলা দায়ের করে।
এদিকে তদন্ত কর্মকর্তাকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই দিন এস আই অচিন্ত কুমার দে সহ সঙ্গী ফোর্স ওই পোনা আহরণকারীদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবী করেন। কিন্তু পোনা আহরনকারীরা কোন মতে ৫ হাজার টাকা ম্যানেজ করে দিলেও ওই কর্মকর্তা তা মেনে না নিয়ে তাদের সাথে কথা-কাটাকাটি করে এ পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগেও নৌপুলিশ এখানে কুতুবদিয়ার আবছারসহ কয়েকজনকে আটক করে ৫৪ হাজার টাকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নৌ-পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, কোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে কোনভাবেই মামলায় আসামী করে হয়রানি করা হবে না। এ মামলায় যদি কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি আসামী হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে।