বোয়ালখালীতে বৈধ ও অবৈধ গাড়ী পার্কিংয়ে বেড়েছে ভোগান্তি
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা সদর, গোমদন্ডী ফুলতল ও শাকপুরা চৌমুহনী বাজার জুড়ে চলছে বৈধ ও অবৈধ গাড়ীর পার্কিং নৈরাজ্য। যেমন খুশি যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং করছে সড়কের দুইপাশে। সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের। এতে কাংখিত গন্তব্যে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বোয়ালখালী উপজেলা সদর, গোমদন্ডী ফুলতল ও শাকপুরা চৌমুহনী এলাকার রোডের প্রধান প্রধান সড়কে সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা কিংবা প্রাইভেট কার পার্কিং করে রাখা হয় দিনরাত। এতে করে প্রদান সড়কটির অধিকাংশই পার্কিং করা গাড়ির দখলে চলে গেছে।এছাড়া বোয়ালখালীর বিভিন্ন এলাকায় গেলেই দেখা মিলবে অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা নিয়মিত যাতায়াত করছে। তারা সড়ক দখল করেই যাত্রী উঠা-নামা করাচ্ছেন। সেই সাথে এসব অটোরিকশার অধিকাংশ চালক অনভিজ্ঞ। ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে কমবয়সি কিশোর এমনকি শিশুদেরও অটোরিকশার ড্রাইভিং সিটে দেখা যায়।
প্রতিদিন বোয়ালখালীর বিভিন্ন স্পটে যানজট লেগে থাকে। যানজটের কারণে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশিরভাগ সড়কের দুইপাশের ফুটপাত দখল করে চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য। যত্রতত্র যানবাহন দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী ওঠা-নামা করানোর কারণে প্রতিটি মোড়েই এক ধরনের বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। সড়কের অভ্যন্তরে ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ অন্যান্য মালবাহী যানবাহন চলাচল এবং অবৈধ পার্কিং-এর ফলে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তার ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বৈধ ও অবৈধ যানবাহন (যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক) চলাচলের ফলে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গত এক মাসে বোয়ালখালীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা না থাকা, সড়কে টোকেনবাজি ও বোয়ালখালী উপজেলা প্রশাশনের অবহেলাকে দায়ী করছেন অনেকে।
বোয়ালখালী উপজেলা সদরের স্থানীয় বাসিন্দা মো. জমির উদ্দীন বলেন, যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং। রাস্তার পাশে বিশাল মার্কেট নির্মাণ করলেও সেগুলোতে পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই।
শাকপুরা এলাকার স্হানীয় আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ করিম বলেন, বোয়ালখালীর বৈধ ও অবৈধ গাড়িগুলো বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার মাঝখান থেকে যাত্রী উঠানো নামানো করে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে বড় ছোট দুর্ঘটনা। নিদির্ষ্ট কোন পার্কিং না থাকায় কিংবা পার্কিং ব্যবস্হা থাকলেও রাস্তার দুইপাশে এলোমেলো ভাবে গাড়িগুলো দাঁড় করিয়ে রেখে রাস্তাকে আরো সরু করে রাখে তারা।
বোয়ালখালী গোমদন্ডী ফুলতল এলাকার ভুক্তভোক্তীরা জানান, যততত্র অবৈধ পাকিং আর যেখানে সেখানে বৈধ ও অবৈধ সিএনজি,অটোরিকশাগুলো থামিয়ে যাত্রী উঠা নামা করে। এতে করে যে যানজট সৃষ্টি হয় তা না দেখে স্হানীয় প্রশাশন নীরব ভূমিকা পালন করছে।
বোয়ালখালীর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম জহুর বলেন,উপজেলা সদরে রাস্তার দুইপাশে অবৈধ পার্কিং না করার জন্য আমাদের পৌরসভার লোক রয়েছে। তাছাড়া বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসিল্যান্ড প্রতিনিয়ত জরিমানা করছে বলে জানান পৌর মেয়র।
বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম জহুর এর এমন বক্তব্যবে বাস্তবে সড়কের চিত্রের সাথে কোন মিল পাওয়া যায়নি।
বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মামুন বলেন,আমরা বেশ কয়েকবার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বোয়ালখালী বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার দুইপাশে বৈধ ও অবৈধ গাড়ীর পার্কিং,ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন চালকদের জরিমানা ও উচ্ছেদ অভিযান করেছি।বোয়ালখালীতে গাড়ী পার্কিং জায়গার তুলনায় যানবাহন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার ফলে যানজটের সৃষ্টি। আমরা বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।