রান্নায় বাহাদুরের বাহাদুরি, ছাড়িয়ে গেছে দোহাজারী
লিয়াকত আলী বাহাদুর বাবুর্চি রান্নার কাজে ব্যবসার চেয়ে তৃপ্তি খোঁজেন বেশি। পেশাদার বাবুর্চি হলেও অনেকটা অন্তর থেকে রান্নাকেও একধরনের ইবাদত হিসেবে নিয়ে প্রতিটি আয়োজনে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে তার কাজটি করে যাচ্ছেন সফলতার সাথে। চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার কিল্লাপাড়া এলাকার লিয়াকত আলী বাহাদুর বাবুর্চি তাই আজ দোহাজারীর গন্ডি ছাড়িয়ে পুরো বৃহত্তর চট্টগ্রামজুড়ে খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান, বিয়ে, আকিকা, ওরশ, মিলাদ মাহফিল, জন্মদিন, বৌভাত, ইফতার পার্টি ও বনভোজন সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পোলাও, কোরমা, কাচ্চি বিরিয়ানী, আকনি পোলাও, কাবাব সহ বিভিন্ন আইটেমের মুখরোচক খাবার রান্নার করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে লিয়াকত আলী বাহাদুর বাবুর্চির। চট্টগ্রাম মহানগর, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি সহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের রান্নার কাজ তিনি করেছেন বলে জানা গেছে।
তাঁর সাথে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে আসে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের বহু দিক। ১৯৯২ সালে দোহাজারী পৌরসভার মুন্সি মিয়া বাবুর্চি ওরফে বড় মুন্সি’র সহকারী (ম্যাট) হিসেবে বাবুর্চি কাজে যোগ দেন। দীর্ঘ ১০ বছর পর অর্থাৎ ২০০২ সাল থেকে ওস্তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অর্ডার নিতে থাকেন এবং সুনিপুণ দক্ষতা ও অত্যন্ত সুনামের সাথে অদ্যাবধি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্নার কাজ করেন লিয়াকত আলী বাহাদুর বাবুর্চি। কোন মসলা কোন খাবারের জন্য নয়, কোন মশলা ঠিক কতটুকু দিলে মাংসের ভেতর পর্যন্ত পৌঁছাবে, রান্নার কোন পর্যায়ে এসে আঁচ ঠিক কতটা কমাতে হবে এসব এখন চোখ বন্ধ করেই সারতে পারেন লিয়াকত আলী বাহাদুর বাবুর্চি।
দোহাজারী পৌরসভার কিল্লাপাড়া এলাকার মরহুম আব্দুল হাশিম ও আছিয়া খাতুন এর পুত্র লিয়াকত আলী বাহাদুর বাবুর্চি ব্যক্তিগত জীবনে ৪ সন্তানের জনক। শীতের মৌসুমে তাঁর দম ফেলার ফুসরত থাকে না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সকাল-বিকাল রান্না করতে থাকেন। এখন অবশ্য আগের থেকে পরিস্থিতি কিছুটা বদলে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাবুর্চিরা আগে যেখানে সপ্তাহে কাজ পেতো ১০ থেকে ১২টা। এখন সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ থেকে ৫টা। আগে খাবার আইটেম কম থাকলেও ক্রমান্বয়ে মানুষের রুচি-অভ্যাসের পরিবর্তন হচ্ছে বিধায় এখন আইটেম অনেক বেড়েছে। বাবুর্চি পেশায় ২০ বছর অত্যন্ত সুনামের সাথে পার করেছি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই পেশাতেই সুনামের সাথে জড়িয়ে থাকতে চাই। রান্নাকে আমি এবাদতের মতোই দেখি।”