যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন আমেরিকান কনক্রিট ইনস্টিটিউট (এসিআই) কতৃক আয়োজিত কনক্রিট প্রজেক্ট শীর্ষক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় গতবছরের ন্যায় এবারো বিজয়ী চুয়েটের একদল শিক্ষার্থী।
১২০টি দেশের প্রতিযোগিদের সাথে লড়ে ২য় রানার আপ হিসেবে পুরস্কার জিতে নেয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন মো. আকরাম হোসেন ও অমিত মল্লিক। উভয়েই চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। স্বল্পসময়ে কিভাবে কংক্রিটের শক্তি বা স্ট্রেন্থ পরীক্ষা করা যায় মূলত সেটি নিয়ে গবেষণা করে তারা এ পুরষ্কার লাভ করেন।
আকরাম হোসেন জানান, সাধারণত কংক্রিটের শক্তি বা স্ট্রেন্থ পরীক্ষা করতে কয়েকদিন সময় লেগে যায়। আমরা সেটি না করে কিছু সমীকরণ ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে স্বল্পসময়ের মধ্যে কাছাকাছি একটা মান পেতে পারি। মূলত এটি নিয়েই আমরা কাজ করেছি।
২০২২ সালের এই প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণের শেষ সময় ছিল ৩১ মে, ২০২২। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজেক্টগুলো হতে ‘ব্লাইন্ড’ পদ্ধতিতে পুরো প্রতিযোগিতার মূল্যায়ন হয়। অর্থাৎ মূল্যায়নের সময় প্রতিযোগিদের নাম ঠিকানা কিছুই জানেন না বিচারকরা। প্রতিযোগিতার নিয়ম ছিল শিক্ষার্থীরা তদের গবেষণা কর্মের দুটি অনুলিপি পিডিএফ ফরম্যাটে পাঠাবেন। ২য় কপিতে শিক্ষার্থী কিংবা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিকানা কিছুই উল্লেখ থাকবে না। এরপর আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিচারকগণ চুড়ান্ত বিজয়ীদের নির্বাচন করেন।
প্রতিবছরই স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে আন্তর্জাতিক এ সংগঠনটি। বৈশ্বিক এই প্রতিযোগিতায় টানা দ্বিতীয় বাবের মত বিজয়ীর পুরষ্কার জিতলো চুয়েট। চুয়েট থেকে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের জন্য পাঠানো দলদুটির মধ্যে একটি ২য় রানার আপ হিসেবে বিজয়ী হয়েছে। পুরষ্কার হিসেবে তারা পাবেন একটি আন্তর্জাতিক সনদপত্রসহ ২৫০ মার্কিন ডলার। বিখ্যাত কনক্রিট ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিনের পরবর্তী সংখ্যায় তাদের কাজ নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।
“কম্প্রেসিভ স্ট্রেন্থ প্রডিকশন অফ সেলফ কমপ্যাক্টিং কনক্রিট ইউজিং আর্টিফিসিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক” শীর্ষক প্রজেক্টের জন্য বিজয়ী হয়েছেন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের এই দুই শিক্ষার্থী। তাদের উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জি এম সাদিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, তাদের এ সাফল্যে অত্যন্ত আনন্দিত। এ ধরনের প্রতিযোগিতায় সাফল্য পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণকে আরও অনুপ্রাণিত করবে বলে মনে করি৷ আন্তর্জাতিক এসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে যেকোনো ধরনের সহযোগিতায় পাশে থাকব।
প্রসঙ্গত, ১৯০৪ সালে আমেরিকান কনক্রিট ইইন্সটিটিউট (এসিআই) এর পথচলা শুরু। বিশ্বের প্রায় ১২০ টি দেশ এ সংগঠনটির সদস্য। প্রতিবছর সদস্য দেশগুলোর শিক্ষার্থী ও গবেষকদের নিয়ে কনক্রিট প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে এ সংগঠনটি। এবছরও স্নাতক পর্যায়ের গবেষণাপত্র আহবান করা হয়। গবেষণাপত্রগুলোর মধ্যে কনক্রিট ডিজাইন, ম্যাটেরিয়াল, কনস্ট্রাকশন সম্পর্কিত কম্পিউটার প্রোগ্রাম, টার্ম পেপার, স্টুডেন্ট এক্টিভিটি, ডিজাইন প্রজেক্ট উল্লেখযোগ্য। আঞ্চলিক পর্যায়ে যাচাই বাচাই শেষে নির্বাচিত প্রজেক্টগুলো পাঠানো হয় মূল প্রতিযোগিতায়।