চন্দনাইশে বিয়ের খাবার খেয়ে ২শতাধিক বরযাত্রী হাসপাতালে

চট্টগ্রামের চন্দনাইশে কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের খাবার খেয়ে ডায়রিয়া, বমি ও পেট ব্যথায় আক্রান্ত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ৩শ জন। আক্রান্তরা চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দোহাজারী ৩১শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পটিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের শাহসূফি বাড়ির কামালের মেয়ে নেহা আক্তারের সাথে একই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মাহাবু চেয়ারম্যান বাড়ির মাজুল গনির ছেলে সালমান মাসুদের বিয়ে ঠিক হয়।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) জুমার নামাজের পর বরযাত্রী যায় বাদামতল এলাকার মাসুমা কনভেনশন সেন্টারে। ওই সময় বর ও কনে পক্ষের বরযাত্রীরা খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই বাড়ি চলে যায়। কিন্তু পরের দিন শনিবার (৩০ জুলাই) বিকালে অনেকের পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া শুরু হলে ক্রমান্বয়ে প্রায় ৩শ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যায়। বর্তমানে সবাই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বিয়ে অনুষ্ঠানের খাবার খেয়ে অসুস্থ কনের চাচা মো. হাশেম ও কনের মা কুসুম আক্তার জানান, গত শুক্রবার দুপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানে খাওয়া দাওয়া করি। পরে পেটে ব্যথা উঠে। রাতে পাতলা পায়খানা হওয়ার পর শনিবার সকালে বিজিসি ট্রাস্ট হাসপাতালে ভর্তি হই। এ ছাড়া আমাদের সঙ্গে যারা খেয়েছেন তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
বিজিসি ট্রাস্ট হাসপাতালে সরেজমিন পরিদর্শন শেষে কথা হয় হাসপাতালটির মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার সুমন কুমার দে’র সাথে। তিনি জানান, খাবারের বিষক্রিয়ার ফলে পেট ব্যথা, বমি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শনিবার রাতে প্রথমে পাঁচজন রোগী ভর্তি হয়। পরে ক্রমান্বয়ে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ভর্তি হন। আমরা সকলে মিলে আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দিয়েছি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং অনেকে অদ্যাবধি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ক্রমান্বয়ে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানান তিনি।

চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু রাশেদ মোহাম্মদ নুরুদ্দীন জানান, আমাদের হাসপাতালে এখন পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ৮ জন, তন্মধ্যে দুজনের অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাদেরকে আজ ছাড়পত্র দিয়েছি। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি বিয়ের অনুষ্ঠানে যারা খাবার খেয়েছেন তাদের অনেকেই পেটের ব্যথা ও পাতলা পায়খানা নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ধারণা করছি জীবানুঘটিত কারনে অথবা খাবারের রান্নাবান্না করতে গিয়ে যে উপদান ব্যবহার করা হয়েছে তাতে সমস্যা থাকতে পারে। সাধারনত বিয়ের খাবারের রং সুন্দর করার জন্য, স্বাদ বা ঘ্রাণ বাড়ানোর জন্য যে উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে তাতে সমস্যা থাকতে পারে। বিষয়টি পরীক্ষা করা ছাড়া নিশ্চিত করা যাবে না। এব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুমা ভট্টাচার্য্য বিয়ের অনুষ্ঠানে খাবার খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

এদিকে রবিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে বিজিসি ট্রাস্ট হাসপাতালে সরেজমিন পরিদর্শন করে ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল শুক্কুর। তিনি ভর্তি থাকা রোগীদের দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করেন।

আরও পড়ুন