দোহাজারী পৌরসভায় আড়তগুলোতে কলার জমজমাট বিকিকিনি

পবিত্র মাহে রমজানে চট্টগ্রাম নগরীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর কলার চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার ডাকবাংলো এলাকার ছোট-বড় ৮টি কলার আড়ত থেকে। এসব আড়ত থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ কলা চট্টগ্রাম নগরীসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হচ্ছে।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে সরেজমিনে দোহাজারী ডাকবাংলো এলাকায় আবাহনী ক্লাবের পূর্ব পাশের কলার আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায়, আড়তের ভেতরে ও বাইরে সামনে সারি সারি কাঁচা ও পাকা কলার কাদি (ছড়া)। এসব আড়তে স্থানীয় কলা ছাড়াও উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল ধোপাছড়ি, পার্বত্য জেলা বান্দরবান থেকে ট্রাক ও নৌকা যোগে কলা নিয়ে আসে পাইকারী ব্যবসায়ীরা।

জসিম উদ্দিন নামে এক আড়তদার বলেন, “প্রতিদিন বেচা-কেনা চললেও সপ্তাহের প্রতি বুধবার, বৃহস্পতিবার, রবিবার ও সোমবার এখানে প্রচুর কলা ওঠে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কলাচাষি ও ব্যবসায়ীরা কলা নিয়ে এখানকার আড়তগুলোতে আসেন। এখান থেকে কলা কিনে খুচরা ও বড় ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এছাড়া পাইকারেরা সরবরাহ করেন পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা সহ বিভিন্ন উপজেলায়। শঙ্খনদী পথে ও সড়কপথে এসব কলা দোহাজারী আড়তে নিয়ে আসেন কলা চাষী ও ব্যবসায়ীরা। শঙ্খনদী পথে সপ্তাহে কমপক্ষে ১০ নৌকা ও সড়ক পথে ১০ থেকে ১২ ট্রাক কলা আসে বলেও জানালেন তিনি।

জিয়াউর রহমান নামে এক আড়তদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, বান্দরবানের চিম্বুক, রুমা, থানছি, বলিবাজার এলাকা থেকেই প্রচুর পরিমাণে কলা আসে। এখান থেকে কলা বাছাই করে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, দোহাজারীর আড়তগুলোতে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি হয়।

আড়তদার রূপন কান্তি নাথ, বাহাদুর, নজরুল ও দেলোয়ারের সাথে কথা বলে জানা যায়, কলার ছড়া ও কলার সাইজ হিসেবে কলার মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বাংলা, চম্পা ও সাগর কলার চাহিদা বেশি থাকায় সুর্যমুখি, আনাজি মত্তন এবং সবরি কলার তুলনায় দাম একটু বেশি। মাহে রমজানকে সামনে রেখে বর্তমানে প্রকারভেদে প্রতিটি কলা ৪ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত পাইকারী হিসেবে কিনতে হচ্ছে তাদের। সে হিসেবে তাদেরও একটু বাড়িয়ে বিক্রি করতে হয়।

ডাকবাংলো এলাকার আড়তগুলো থেকে স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীরা ছড়ায় ছড়ায় কলা কিনে নিয়ে গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রি করেন। আবার পাইকারী ব্যবসায়ীরা বেশি পরিমাণ কলা কিনে ট্রাক, মিনি ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহনযোগে চট্টগ্রাম নগরী, পটিয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া এমনকি টেকনাফ পর্যন্ত সরবরাহ করেন।

চন্দনাইশ উপজেলার দক্ষিণ হাশিমপুর এলাকার জসিম নামে এক ব্যবসায়ী যাত্রীবাহীবাসে ফেরী করে কলা বিক্রি করেন। তার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সপ্তাহের প্রতি রবিবার, সোমবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার দোহাজারী কলার আড়তে প্রচুর পরিমাণে কলা আসে। এসময় তিনি চাহিদা মতো কলার ছড়া ক্রয় করে যাত্রীবাহী বাসে বিক্রি করেন। শীত মৌসুমে বিক্রি কিছুটা কম হলেও রমজান মাস ও তীব্র গরমে তার ভালো আয় হয়।

দোহাজারী কিল্লাপাড়া এলাকায় শওকত হোসেন নামে এক কলা ব্যবসায়ী জানান, বিগত ২৭ বছর ধরে ভ্যানে করে কলা বিক্রি করেন তিনি। উপজেলার রওশনহাট, খানহাট, বাগিচাহাট, কেরানীহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যান কলা বিক্রি করতে।