মানবাধিকার কর্মী নয়, জম হিসেবে আভির্ভূত বাঁশখালীর শাহিন

“আজরাইল চিনিস? আমি তোর জম, তোরে শীলকূপ বসবাস করতে দিবো না। বাড়ি হতে তুলে নিয়ে আসবো, আমরা মানবাধিকার কর্মী, দেখলে জর্জ ব্যারিষ্টারও চেয়ার থেকে উঠে যায়।‘

কথাগুলো কথিত মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ হোছাইন প্রকাশ শাহীনের। তিনি নিজেকে ‘উপকূল মানবাধিকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা’র বাঁশখালী উপজেলা শাখার সভাপতি দাবী করেন।

প্রসঙ্গত, শীলকূপ ইউপির মোহাম্মদ ইয়াছিন আরফাতের চাচাত ভাই বাদশার সাথে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। মো. হোছাইন মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে জায়গা-জমির বিবাদী সালিশকারক হিসাবে সমাধান করে দিবে বলে ইয়াছিন আরফাতেরর সাথে ফোনে কথা বলেন। ইয়াছিন আরফাত তাকে চিনে না, তাই তার কথায় সালিশে বসবে না এমনটি বলতেই ওই মানবাধিকার কর্মী ইয়াছিনকে তুলে নিয়ে মারধরসহ খুন করার হুমকি দেয় মুঠোফোনে। এক পর্যায়ে সালিশে বসার জন্য ইয়াছিনের পিতা মো. হোসেন ও চাম্বল ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছরওয়ার হোসেন বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

এ প্রসঙ্গে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মোহাম্মদ ইয়াছিন আরফাত অভিযুক্ত কথিত মানবাধিকার কর্মী হোছাইনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য বাঁশখালী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মোহাম্মদ হোছাইন নিজেকে মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জনকে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জায়গা-জমির সমস্যার সমাধান করে দিবে বলে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন। কেউ তার কথা না শুনলে হুমকিধমকি দিয়ে রীতিমতো আতংক সৃষ্টি করছে।

এ বিষয়ে উপকূল মানবাধিকারের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি মিজবাহুল ইসলাম বলেন, ‘মো. হোছাইন শাহীন উপকূল মানবাধিকার বাঁশখালী উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। তার কার্ডের মেয়াদ শেষ। তার অনৈতিক কার্যকালাপের বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। তাকে বহিঃস্কার করার জন্য উধ্বর্তন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি জায়গা-জমির সমস্যার সমাধান করে দিবে বলে নানাজন থেকে টাকা নিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ পেয়েছি, যা মূলত অপরাধ। একজন মানবাধিকার কর্মীর কাজ এরকম হতে পারে না।

উপকূল মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা তো মানুষের কল্যাণে বিনা স্বার্থে সেবামূলক কাজ করি। তাছাড়া এখানে মোহাম্মদ হোছাইন কাউকে সালিশ বিচারের জন্য হুমকি ধমকি দেওয়া ত দূরের কথা লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ারও এখতিয়ার রাখে না। তার কার্ডের মেয়াদ শেষ। তার অপকর্মের বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। তাকে স্বপদে বহাল রাখিনি। কার্ডের নবায়ন তো দুরের কথা, তাকে বহিস্কার করা হবে বলে জানান তিনি।

বাঁশখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত ওই মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।