চট্টগ্রামের বাঁশখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে জাল খতিয়ান উপস্থাপন করে মামলা দায়ের করে ৪০ শতক লবণ মাঠের জায়গায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ হাসিলের অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খতিয়ান জালিয়াতির অভিযোগে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের ছোট ছনুয়া ১নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মৃত কালা মিয়া প্রঃ মোঃ কালুর পুত্র ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমদের খরিদা ও মৌরশীপ্রাপ্ত ৪০ শতক লবণ মাঠের জায়গা ভূয়া খতিয়ান সৃজনের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে একই এলাকার মৃত আব্দু ছালামের পুত্র নুরুল হক ও তার ভাই জাকের হোসেন গং। ওই জায়গা দখলে নিতে ভুক্তভোগী জাফর আহমদকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধমকি প্রদান করে আসছিলেন তারা। ওই জাল খতিয়ান দ্বারা বাঁশখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করে জাকের হোসেন ও নুর হোসেন গংরা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ হাসিল করে নেয়। এতে ভুক্তভোগী জাফর আহমদ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে এবং তাৎক্ষনিকভাবে আদালতের দায়েরকৃত ওই জাল খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করে জাকের হোসেন ও নুর হোসেন গংদের বিরুদ্ধে বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সি,আর-৯১৯/২০২৩) মামলা দায়ের করেন।
বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিপক্ষের লোকজন ওই জায়গা জোরপূর্বক জবর দখলের চেষ্টা করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর বিজ্ঞ আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যবস্থা গ্রহণেরও আবেদন করেন জাফর আহমদ। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয়পক্ষকে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ মেনে বিরোধীয় জায়গায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী জাফর আহমেদ বলেন, ‘আমার খরিদা ও পৈত্রিক মৌরশী সূত্রে প্রাপ্ত আমার দীর্ঘদিনের দখলীয় ৪০ শতক লবণ মাঠের জায়গার একটি জাল খতিয়ান সৃজন করে জাকের হোসেন ও নুরুল হক গং। তারা ওই জাল খতিয়ান উপস্থাপন করে বাঁশখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করে এবং ওই মামলায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশও হাসিল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয় নিষেধাজ্ঞার আদেশ হাসিল করেই ওই জায়গাটি দখলের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। আমি প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠ প্রতিকারের দাবি জানাচ্ছি।’
অভিযুক্ত জাকের হোসেন ও নুরুল হক গংদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, ‘জায়গাটি আমাদের পৈতৃক। আমাদের পিতার নামে বি,এস খতিয়ান সৃজন আছে। জায়গাটিতে অহেতুকভাবে দাবী করছে জাফর আহমেদ। এই নিয়ে বাঁশখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছি এবং বিজ্ঞ আদালত ওই জায়গায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রচার করেছেন।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, ‘আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ মেনে চলার জন্য উভয়পক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’