মিরসরাইয়ে ফেনী নদীর ভাঙ্গনরোধে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার ধুম ইউনিয়নের শুক্রবারিয়াহাট এলাকায় নদীর পাড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রায় ৫ শতাধিক এলাকাবাসী অংশ নেয়। ফেনী নদীর পাড় সংরক্ষণ ও ভাঙ্গন প্রতিরক্ষা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা নুরুন নবী ভূঁইয়া, উপদেষ্টা সাইফ উদ্দিন চৌধুরী রুপম, নুরুল কাদের হোসাইনী, কমিটির সভাপতি ও ধুম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমান ভোলা, সাধারণ সম্পাদক হাজী শামসুদ্দীন ভূঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমুল হোসেন ভূঁইয়া।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফেনী নদীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে ধুম ইউনিয়নের মোবারকঘোনা গ্রাম ও ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের চর কালিদাশ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কটি। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙ্গনের আশংকায় শুক্রবারিয়াহাট জামে মসজিদ, একটি ঈদগাঁ, উত্তর মোবারকঘোনা ফোরকানীয়া ও নূরানী একাডেমী, উত্তর মোবারকঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শুক্রবারিয়াহাট বাজার ও এলাকায় তিনটি কবরস্থান নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা করছি।
মানববন্ধনে বিভিন্ন রঙিন পেষ্টুনে ‘নদী ভাঙ্গন ঠেঁকাও, শুক্রবারিয়াহাট বাঁচাও’, ‘মৎস্য প্রকল্পের ওভারলোড় গাড়ি নিয়ন্ত্রন করি, নদী ভাঙ্গন ও এলাকা রক্ষা করি’। ‘প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি চাই, নদী ভাঙ্গন রোধ চাই’ নদী ভাঙ্গন রোধ করি, মাদ্রাসা, মসজিদ ঈদগাঁ, কবরস্থান, স্কুল রক্ষা করি’ এসব শ্লোগান সংবলিত দাবী নিয়ে ফেনী নদীর তীরে মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন অংশ নেয়।
এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব রবিউল হোসেন বলেন, এই নদীতে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে অনেকের ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। অনেকে জায়গাজমি হারিয়ে এখান থেকে অন্যত্র চলে গেছে। এখন চলাচলের একমাত্র সড়কটি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। এলাকার ২০ হাজার মানুষের পক্ষ থেকে আমরা সরকারের কাছে ভাঙ্গনরোধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানাচ্ছি।
শুক্রবারিয়াহাট বাজারের ব্যবসায়ি আশরাফুল ইসলাম তসলিম বলেন, এখানে আতংকে মধ্যে ব্যবসা করছি। যেভাবে রাস্তা ভেঙ্গে নদীতে চলে যাচ্ছে, বøক দিয়ে মেরামত না করলে যেকোন সময় আমাদের বাজারও নদী গর্ভে চলে যেতে পারে।
বেলাল হোসেন নামে একজন বলেন, প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টন মাছের খাদ্য নিয়ে বড় বড় ট্রাক মৎস্য প্রকল্পে নেওয়া হয়। একেতো আগে থেকে নদী ভাঙ্গন রয়েছে, তার উপর খাদ্যবাহী ভারী ট্রাক চলাচলের কারণে সড়ক দেবে গিয়ে ভাঙ্গন আরো তীব্র হচ্ছে।
ফেনী নদীর পাড় সংরক্ষণ ও ভাঙ্গন প্রতিরক্ষা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমুল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ভাঙ্গনরোধে আমাদের স্থানীয় চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া কিছু ব্লক দিয়েছেন। ব্লকগুলো ফেলা হয়েছে। তবে স্থায়ীভাবে ব্লক তৈরি না করলে ভাঙ্গন রোধ কিছুতেই সম্ভব নয়।
ফেনী নদীর পাড় সংরক্ষণ ও ভাঙ্গন প্রতিরক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী শামসুদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, বড় বড় ট্রাক মাছের খাদ্য নিয়ে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাওয়ার কারণে নদীর পাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। এই ট্রাকগুলোর চলাচল বন্ধ না হলে এবং টেকসই বøক দিয়ে মেরামত করা না গেলে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কবরস্থান ও বাজার বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছি। এ বিষয়ে আমাদের অভিভাবক সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।