মিরসরাইয়ে বাস চাপায় নিহত শিক্ষার্থীর ভাইয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নিল এস রহমান ট্রাস্ট

মিরসরাইয়ে বাস চাপায় নিহত স্কুুল শিক্ষার্থীর ভাইয়ের আজীবন পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে এস রহমান ট্রাস্ট। চলতি বছরের ৩১ মে স্কুল ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কের জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁটাবিল এলাকায় মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী বহনকারী বাস চাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় হাজীশ্বরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান রিমা।

নিহত রিমার বড় ভাই জাহিদ হাসান জিহান জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। তার আজীবন পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে এস রহমান ট্রাস্ট।

সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এস রহমান ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আজীবন শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে প্রতি মাসে আড়াই হাজার টাকা করে ৪ মাসের শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে ৪টি চেক তুলে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীর পিতা জামাল উদ্দিনের হাতে।

এসময় মকবুল আহমেদ কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে এককালীন ১ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়।

অনুদান তুলে দেন জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাষ্টার, মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আজমল হোসেন, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রভাষক নোমান মো: নিজাম উদ্দিন ও জীব বিজ্ঞানের প্রভাষক ফেরদৌস হোসাইন।

শিক্ষার্থীর পিতা জামাল উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনা ইচ্ছাকৃতভাবে হয়নি। হায়াত মউত আল্লাহর হাতে। আমার কপালে যাই ছিল তাই হয়েছে। আমি এর জন্য কাউকে দায়ী করছি না। একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। কিছু ড্রাইভারের বেপরোয়া গতির গাড়ি চালানোর কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। আমি চাই এভাবে আর কারো মায়ের কোল যেন খালি না হয়। আমার দুঃসময়ে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি এস রহমান ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ এবং জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাষ্টারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুুল এন্ড কলেজের প্রভাষক নোমান মো. নিজাম উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে অদ্যাবধি এস রহমান ট্রাস্ট থেকে ১ লক্ষাধিক টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় ইসরাত জাহান রিমার পরিবারকে। এছাড়া নিহতের বড় ভাই জাহিদ হাসান জিহানের পড়ালেখার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছে এস রহমান ট্রাস্ট এবং তাকে একটি বাইসাইকেলও প্রদান করা হয়। নিহতের ভাইয়ের নামে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে শিক্ষাবৃত্তির আওতায় প্রতি মাসে আড়াই হাজার টাকা করে আজীবন শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হবে। এছাড়া উচ্চতর শিক্ষার্জনের ক্ষেত্রে সমসাময়িক শিক্ষা ব্যয় বহন করবে এস রহমান ট্রাস্ট।

জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাষ্টার বলেন, নিহত শিক্ষার্থী আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা। আমাদের অভিভাবক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির নির্দেশে তাৎক্ষণিক যা যা করা দরকার আমরা করেছি। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীর পিতা জামাল উদ্দিনকে আমার তত্বাবধানে পরিচালিত মকবুল আহমেদ কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকা প্রদান করেছি। এছাড়া নিহতের পরিবারকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকার ভাতা প্রদান ও নিহতের ভাইয়ের স্কুুলের বেতন মওকুফসহ বিভিন্ন প্রকার সহযোগিতা করে আসছি, ভবিষ্যতেও সহযোগিতা করবো ইনশাল্লাহ।

আরও পড়ুন