কাউন্সিলরের উদ্যোগে যান চলাচলে উপযুক্ত হলো দোহাজারী-চাগাচর-ভোরবাজার সড়ক

গত ৭আগস্ট থেকে ১১আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন অবিরাম মুষলধারে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারনে সৃষ্ট বন্যায় চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভা সদর থেকে চাগাচর হয়ে ভোর বাজার পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। ১১আগস্ট বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর রাস্তাটি ভেসে উঠলে বিধ্বস্ত রূপ দেখা যায়। তিন কিলোমিটার রাস্তার ১১টি অংশে পিচ ও ইটের খোয়া সরে গিয়ে পুকুর ও খাল সাদৃশ্য বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। ফলে রাস্তাটি দিয়ে যান চলাচল দূরে থাক পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছিলো।

এমতাবস্থায় লোকজনের দ্রুত নির্বিঘ্ন চলাচলের স্বার্থে চন্দনাইশ উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ জুনাইদ আবছার চৌধুরী ও দোহাজারী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান হাকিমের সার্বিক তত্বাবধানে রাস্তার বিভিন্ন অংশের গর্তগুলো মাটি, বালু ও ইটের খোয়া ফেলে ভরাট করে ডাবল ব্রিক সলিং দ্বারা সংস্কার করে রাস্তাটি যাতায়াতের উপযোগী করে তোলেন ১নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আব্দুল আজিজ মাসুম।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৯ সালের বন্যার পর থেকে দীর্ঘ চার বছর ধরে দোহাজারী-চাগাচর-ভোরবাজার রাস্তাটি ভাঙাচোরা অবস্থায় ছিলো। গত ৭আগস্ট থেকে ১১আগস্ট পর্যন্ত স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় রাস্তাটি তলিয়ে দোহাজারী সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্যায় রাস্তার ওপর দিয়ে অন্তত সাত ফুট উচ্চতায় পানি উপচে পড়েছে। পানির তীব্র স্রোতে রাস্তার বিভিন্ন অংশে পুকুর ও খালের মত বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। পুরো রাস্তাটি এবড়োথেবড়ো হয়ে পড়ে। রাস্তাটি সংস্কার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করলেও রাস্তার দুই পাশে বন্যা প্রতিরোধক ওয়াল নির্মাণ করে তিন কিলোমিটার রাস্তাটি স্থায়ীভাবে টেকসই সংস্কারের দাবি জানান তাঁরা।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাস্তাটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন দোহাজারী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান হাকিম। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন কাউন্সিলর মো. আব্দুল আজিজ মাসুম, সমাজসেবক মো. শামসুল হুদা, মো. আব্দুল হাফেজ, মোঃ নাছির কোম্পানি, মোঃ সেলিম, আব্দুল মান্নান চৌধুরী, নোমান রেজভী সহ স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ।

এসময় কাউন্সিলর আব্দুল আজিজ মাসুম বলেন, শঙ্খ নদী তীরবর্তী হওয়ায় সাম্প্রতিক বন্যায় আমার ওয়ার্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দোহাজারী সদরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটির ১১টি অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে খালে রুপান্তর হয়েছিলো। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র মহোদয় ও উপজেলা প্রকৌশলীর আশ্বাসে আমার নিজস্ব অর্থায়নে এলাকাবাসীর আন্তরিক সহযোগীতায় রাস্তাটি সংস্কার করে যানচলাচলের উপযোগী করেছি। উপজেলা প্রকৌশলী রাস্তাটি পরিদর্শন করে সংস্কার করা অংশগুলো পরিমাপ করে আমার টাকা ফেরৎ দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

দোহাজারী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় দোহাজারী পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ড যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় পরিণত হয়েছিলো। শঙ্খ নদী তীরবর্তী হওয়ায় চাগাচর ওয়ার্ডে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিন কিলোমিটার রাস্তার ১১টি অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে রাস্তা খালে পরিণত হওয়ায় যানচলাচল দূরে থাক পায়ে হেঁটেও যেতে পারেনি মানুষ। দৈনন্দিন কেনাকাটার জন্য দোহাজারী সদরে যেতে কিংবা হাসপাতালে রোগী নিতে হলে চাগাচর থেকে নৌকা কিংবা ইঞ্জিন চালিত বোটে করে যেতে হতো জনসাধারণকে। এমপি মহোদয়, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকৌশলী রাস্তাটি পরিদর্শন করে দ্রুত সংস্কার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কাউন্সিলর মো. আব্দুল আজিজ মাসুম রাস্তার বিভিন্ন অংশের গর্তগুলো মাটি, বালু ও খোয়া ফেলে ভরাট করার পর ব্রিক সলিং করে আপাতত যানচলাচল উপযোগী করেছেন। রাস্তাটি টেকসই করে সংস্কার করতে দ্রুততম সময়ে দরপত্র আহ্বান করার পর কাজ শুরু করা হবে বলে উপজেলা প্রকৌশলী আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।

আরও পড়ুন