বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে চলছে নানামুখী তৎপরতা : চসিক মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম মহানগরকে নান্দনিক, ব্যবসা উপযোগী, গ্রীণ সিটি হিসেবে রূপান্তর করতে হলে পর্যায়ক্রমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও আধুনিকায়নের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে মান্ধাতার আমলের প্রক্রিয়াগুলোর পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মডেল অনুসরণ করে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় মনে করে জনবল সংকট ও আর্থিক সাশ্রয় বিবেচনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠভাবে পরিচালনা ও আধুনিকীকরণে আউটসোর্সিং এর কোন বিকল্প নেই।

আজ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন বাটালিহিলস্থ অস্থায়ী নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড আবাসিক এলাকার সমন্বয়ক ফোরামের সাথে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সমন্বয় ফোরামের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউল্লাহ, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. মহসিন, মো. এনামুল হক, এ.এম জহিরুল আলম, শহিদুল্লাহ পাটোয়ারী, সাবেক কাউন্সিলর মো. জাবেদ নজরুল ইসলাম, পরিচ্ছন্ন বিভাগের জোন প্রধান আলী আকবর প্রমুখ।

মেয়র বলেন, ইতোমধ্যে জাপানের জাইকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোইকা কর্তৃক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সম্ভ্যাব্যতা যাচাই বাচাই পূর্বক কিছু প্রস্তাবনা চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনকে দেয়া হয়েছে। এরই আলোকে মেডিকেল বর্জ্য অপসারণ করার জন্য হালিশহরস্থ আনন্দবাজারে টি.জি পার্শ্বে ইনসিনেরেটর প্লান্ট স্থাপন করা হয়। জাইকা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনসিনেরেটর (চুল্লী) স্থাপন করছে। এ ইনসিনেরেটর প্ল্যান্টের মাধ্যমে বিষাক্ত মেডিক্যাল বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইনে উৎপন্ন বর্জ্য উৎপত্তিস্থল থেকে গৃহস্থলী, প্লাষ্টিক, ধাতব এ তিন ভাগে করে অপসারণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ঢাকাসহ অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন সমুহে এই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে। বাস্তবতা নিরিখে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন ২৪ ও ০৭ নং ওয়ার্ডকে পরীক্ষা মূলকভাবে আউটসোর্সিং এর আওতায় আনায় প্রক্রিয়া গ্রহণ করছে। পর্যায়ক্রমে ৪১টি ওয়ার্ডে আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে।

মেয়র আরো বলেন, মেসার্স পাওয়ার সোর্সের মাধমে আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন ডাস্টবিন গুলোকে পর্যায়ক্রমে ফুলের বাগানে পরিণত করায় ফলে এলাকাবাসি সষ্টুষ্ট। তিনি আবাসিক এলাকা বাসিকে এই প্রক্রিয়া সাথে সহয়োগিতা করার জন্য আহবান জানান। তিনি বলেন, সমন্বয় ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে আউট সোসিং এর মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে যে মত বিনিময় হয়েছে তা ফলপ্রসু। তবে কোন কিছু জোর করে চাপিয়ে দেয়ার কোন অবকাশ থাকতে পারে না। কোন পরিবর্তন রাতারাতি আনা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা ছাড়া কোন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, এ নগরের মালিক হচ্ছে নগর বাসি। নগরবাসির মতামতের প্রতিফলন ঘটানোই মেয়রের প্রধান দায়িত্ব পাশাপাশি মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনাও প্রতি পালন করা আমাদের কর্তব্য। সভায় আবাসিক এলাকা সমন্বয় ফোরামের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মতবিনিময়কালে মেয়র মহোদয়ের আন্তরিকতায় ও সৌহর্দপূর্ন আচরনে আমরা মুগ্ধ। আমরা মনে করি চট্টগ্রাম নগর আমাদের সকলের। তিনি আবাসিক এলাকা সমন্বয় ফোরাম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে ও নগর উন্নয়নে যে কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে তা স্বাগত জানান। তিনি আবাসিক এলাকায় রাস্তা, বিদ্যূৎ, কালভার্ট ও নালা সমুহ পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংলিষ্ট প্রকৌশলীদের তৎক্ষণিক নির্দেশনা প্রদান করায় সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছেন।

উল্লেখ্য ২৫ সেপ্টেম্বর হতে মেসার্স পাওয়ার সোর্সের ব্যবস্থাপনায় ২০০জন সেবক, ২০জন সুপারভাইজার ১২টি থ্রি হুইলার গাড়ী ৩০টিভ্যানের মাধ্যমে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও অলিগলি হতে গার্ভেজ ব্যাগের মাধমে বর্জ্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন