চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বহুল কাংখিত পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালে প্রথমবারে মতো পরক্ষীমূলকভাবে ভিড়তে যাচ্ছে এমভি টাও ট্রিজার (TAO TREASURE) নামে একটি বিদেশী জাহাজ। প্রায় ১৯ হাজার ৫শ মেট্রিক টন জিআই স্টিল কয়েল নিয়ে জাহাজটি এ টার্মিনালের দ্বার উন্মোচনের সারথী হতে যাচ্ছে। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নির্মাণের প্রায় ১৬ বছর পর নবনির্মিত এই কনটেইনার টার্মিনালে আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) পরীক্ষামূলকভাবে লম্বায় ১৫৮ মিটার এবং ড্রাফট ৮ দশমিক ৯৫ মিটার পরিধির এ জাহাজটিকে স্বাগত জানানোর জন্য পুর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বন্ধর কর্তৃপক্ষ। ১ হাজার ৬০৯টি কয়েলের ৪২৮ দশমিক ৭২০ মেট্রিক টন ওজনের পণ্য সম্বলিত জাহাজটির লোকাল এজেন্ট হক এন্ড সন্স লিমিটেড।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, আমরা পরীক্ষামূলকভাবে খোলা জাহাজ ভিড়ানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আরও জাহাজ ধীরে ধীরে সেখানে ডক করা হবে, যা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ক্রমবর্ধমান কার্গো হ্যান্ডলিং চাপ কিছুটা কমিয়ে দেবে। পণ্য খালাস কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে সম্পাদনে সফল হলে সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে পিসিটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান গত রবিবার (১৭ জুলাই) নবনির্মিত টার্মিনাল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল চালুর বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবহিত করেছে।
হক এন্ড সন্স লিমিটিডের জেনারেল ম্যানেজার ক্যাপ্টেইন মোঃ জিয়াউল হক বলেন, এই ভেবে আমরা আনন্দিত যে দীর্ঘ ১৬ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরের নবনির্মিত পিসিটি আমাদের জাহাজ দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে। পিসিটি সম্পূর্ণ রূপে চালু হলে বন্দরের সক্ষমতা যেমন বাড়বে তেমনি আমরাও বেশ উপকৃত হব এই জন্য যে পিসিটিতে আমরা আমাদের সাড়ে ১০ মিটারের জাহাজগুলো দ্রæত বার্থিং করাতে পারব। কেননা বহিঃনোঙর থেকে মূল জেটির দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার, যেখানে পিসিটির দূরত্ব ৬ কিলোমিটার। এছাড়া পণ্য খালাসের পর সেই পণ্য ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে মূল শহরের ভেতর দিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। আউটার রিং রোড হয়ে সরাসরি নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে যাবে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দর চেয়ারম্যানের সাথে প্রতিটি সভায় আমরা পিসিট ও বে-টার্মিনাল দ্রুতভাবে চালুর বিষয়ে অবগত করে আসছি। পিসিট চালু হতে যাচ্ছে পরীক্ষামূলকভাবে আমরা এতে সত্যিই আনন্দিত। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও নবনির্মিত এই পিসিটির সুবিধা পেতে হলে দ্রæত অপারেটর নিয়োগের মাধ্যমে টার্মিনালকে পুরোপুরি চালু করতে হবে। আশাকরি বন্দর কতৃপক্ষ খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ জুন অনুমোদিত পিসিটি প্রকল্পটি ২০১৯ এর ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তখন প্রকল্পটির মাত্র ৪৫% কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ালেও পিসিটির কাজ সম্পূর্ণ শেষ করতে পারেনি। ফলস্বরূপ প্রকল্পের কাজ আরো একবছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল।