চট্টগ্রামে বর্ণিল আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস – ২০২৪ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে এ দিনটি উদযাপন করে।

কর্মসূচি শুরু হয় ১৭ মার্চ সকাল ১০ টায় নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অপর্র্ণ করার মধ্য দিয়ে। এসময় বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশসুপার, জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, মহানগর ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলসহ, সর্বস্তরের জনসাধারণ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর বিভাগীয় কমিশনার বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্ধোধন করেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণ পরবর্তীতে সকাল ১০.৩০ টায় শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, ডিআইজি নুরেআলম মিনা, পুলিশ সুপার এস. এম. শফিউল্লাহ্, কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ. কে. এম. সরোয়ার কামাল বক্তৃতা করেন। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ‘ব’ তে বঙ্গবন্ধু ‘ব’ তে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। এ দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর গুরুত্ব অপরিসীম। একটা সময় পাঠ্যপুস্তক থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়েছিল, সে কারণে অনেকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানে না। আমি ছোট্ট শিশুদের প্রতি আহŸান জানায় তোমরা বঙ্গবন্ধুর জীবনী পড়। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর সাহসকে তোমাদের মনে ধারণ করো। জীবনকে গড়তে হলে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে এগিয়ে যেতে হবে। ভয়ভীতি ত্যাগ করে মানুষের তরে জীবনকে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। তবেই আমরা বিশে^র কাছে স্বাধীন জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব, এখানেই জীবনের স্বার্থকতা নিহিত রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে শিশুদের প্রস্তুত হতে আহŸান জানায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলার জীবন কাহিনী বর্ণনা করে শিশুদের মাঝে তা ছড়িয়ে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিশু কিশোরদের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠতে হবে। শিশু কিশোরদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে তোমরা মাদক, মোবাইল, কিশোর গ্যাং কালচার থেকে দুরে থেকে নিজেকে অসাম্প্রদায়িক এবং বিজ্ঞানমনস্ক সুনাগরি হিসেবে গড়ে তুলবে।

অনুষ্ঠান শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও শিশু একাডেমির চিত্রাংকন, হাতের লেখা, নৃত্য ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গানের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিভিন্ন মসজিদ ও ধর্মীয় উপসনালয়ে মিলাদ মাহফিল, দোয়া প্রার্থনা করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬.১৫ টায় শিশু সদন, শিশু পরিবার ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
বিভাগীয় তথ্য অফিস,জেলা তথ্য অফিস এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে সারাদিন ডিসি হিল, সিআরবি, টাইগারপাস ও জিইসি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয় এবং ৭ই মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়।
এছাড়াও সন্ধ্যা ৭.০০টায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জাকরণের ব্যবস্থা করা হয়।