চট্টগ্রামে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের চেক বিতরণ

আপনারা দেখেছেন বিশ্বে কিছু মানবাধিকার সংগঠন এবং আমাদের দেশের কিছু বিবৃতিকারী রয়েছে যারা কথায় কথায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলে। কিন্তু পেট্রোল বোমা মেরে যখন মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তখন তাদের কারো বিবৃতি আর পাওয়া যায়না। সামনে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে উদ্দেশ্য করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বলছি মানবাধিকারকে তারা এখন ব্যবসায় পরিণত করেছে ।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এস রহমান মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন(সিইউজে) আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সিইউজে’র সভাপতি তপন চক্রবর্তী’র সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস ও কলিম সারোয়ার, সিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, সিইউজে’র সহ-সভাপতি অনিন্দ টিটু বক্তৃতা করেন। এসময় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং চেক গ্রহনকারী ও তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্য মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করে হত্যার বিচার বন্ধ করার মধ্য দিয়ে। তারপরে ৭৭ সালে নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমান বাহিনীর অফিসারদের হত্যা করা। একজনের নামের সাথে আরেকজনের মিল থাকলে তাকেও ফাসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে। এরপর ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ২০১৩,১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার মহোৎসব চালানো হয়েছিল। এগুলো চড়ম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা। রাজনৈতিক কারণে যে কেউ হরতাল, অবরোধ বা সরকার পতনের ডাক দিতে পারে। এটি গণতান্ত্রিক সমাজের রীতি। কিন্তু হরতাল, অবরোধের ডাক দিয়ে ঘরে বসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা বা মানুষ হত্যা করা কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ড নয়। সেগুলো হল সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা। আমি আশা করবো সাংবাদিকরা এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন, কলম ধরবেন।

তিনি আরো বলেন, যে সমস্ত বিশ্ব বেনিয়া এবং বাংলাদেশেও যারা মানবাধিকারের কথা বলেন তারা ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মত মানুষ মারা নিয়ে কোন কথা বলেন না। যেখানে এখন পযর্ন্ত নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ মারা হয়েছে, হাসপাতালে বোমা বর্ষণ হয়েছে সেসব বিষয় নিয়ে কোন বিবৃতি প্রকাশ করেনি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে এ হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাকালীন সময় যখন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান শুরু করি তখন প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করেই বলেছি এ ট্রাস্টের অনুদান সবাই পাবে। এখানে কে কোন দল বা মতের বিশ্বাসী সেটা প্রাধান্য পাবে না। তিনি দুস্থ বা প্রাপ্যতা আছে কিনা সেটা দেখে অনুদান প্রদান করা হবে। সেকারণে কল্যাণ ট্রাস্টের সহায়তা আজকে সকল সাংবাদিক পাচ্ছে। সমস্ত বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীনদের গৃহ প্রদান করছেন এটি একটি অভাবনীয় উদ্যোগ। এছাড়া সরকার নানা ধরনের ভাতা ও সুযোগ সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে। কিন্তু এ সরকারের পরিবর্তে অন্যকোন সরকার ক্ষমতায় আসলে তাদের সাথে ভিন্নমতাবলম্ভীরা এ সুযোগ পাবে কিনা সেটা বলা যায়না। আপনাদের বিবেক-বুদ্ধি আছে। দেশ কিভাবে পরিচালনা করলে সুবিধা হয় সেটি আপনাদের বলে দেয়ার প্রয়োজন নেই। সাংবাদিকরা সমাজের আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। সমাজের অগ্রসর মানুষ হচ্ছে সাংবাদিক। তাই, আপনাদের দায়িত্ব সমাজ যাতে সঠিকভাবে চিন্তা করতে পারে সেটা দেখিয়ে দেয়া।

আরও পড়ুন