কুতুবদিয়ায় খিরা, ফলন দাম দুটোই চড়া

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় খিরা চাষ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। প্রতি বছরই এ ফসলের চাষের জমি বাড়ছে। এ চাষ করে অনেকেই এখন ভাগ্য বদল করছেন। বর্তমানে সাড়ে তিন শত চাষি এ চাষে যুক্ত। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার খিরা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কুতুবদিয়ায় উৎপাদিত খিরা খেতে সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও রয়েছে ভাল।

এদিকে বর্তমানে বাজারে খিরা ভালো দাম রয়েছ্ েপ্রতিমণ খিরা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকায়। সামনে আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন চাষীরা।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ১৮ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১ হেক্টর বেশি। উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের মগডেইল,ঘোনার মোড়, মুরারিলা, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের নাছিয়ার পাড়া, ফতেহ আলী সিকদার পাড়া গ্রামে প্রধানত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই খিরা চাষ হচ্ছে।

প্রতিদিন ভোরে চাষীরা খিরা ক্ষেত থেকে তুলে বড়ঘোপ মগডেইল রাস্তার মাথায় নিয়ে আসে, উপজেলার ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে খিরা নিয়ে যায়, সেখানে প্রায় দু’শ থেকে আড়াইশ মণ খিরা মিটারে পরিমাপ করা হয় বলে জানান মিটারের মালিক আবু আহমদ ।

বড়ঘোপ ইউনিয়নের মগডেইল এলাকার ফরিদ আলম (৫৫) জানান, দীর্ঘ ১১ বছর ধরে তিনি ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে খিরা চাষ করছেন। এ কাজে তার ছেলেরাও সরাসরি সহায়তা করে থাকেন। এবছর খিরার দাম বাড়তি হওয়ায় লাভ ভালো হবে। প্রতি বছর তিনি প্রায় এক লাখ টাকা ঘরে তোলেন বলে জানান।

আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের ফতেহ আলী সিকদার পাড়া গ্রামের প্রান্তিক চাষী হেলাল উদ্দিন (৩৫) বলেন, তিনি ৫ বছর ধরে ২৪ শতক জমি র্বগা নিয়ে খিরা চাষ করছেন। এই বছর ফলন ও দাম ভাল হওয়ায় লাভও বেশি হবে। প্রতি বছর খরচ বাদে ৭০-৮০ হাজার টাকা থাকে বলে জানান।

উত্তর মগডেইল এলাকার প্রান্তিক চাষী দুদু মিয়া(৫০) জানান, ২৪ শতক জমি বর্গা নিয়ে খিরা চাষ করছেন। শুরুতে চারা মারা যাওয়ায় নতুন ভাবে চারা রোপন করতে হয়েছে, দেরিতে খিরা উৎপাদন হওয়ায় বাড়তি দাম পায়নি, লাভ একটু কম হবে বলে জানান।

পার্শ্ববর্তী উপজেলা উপজেলা পেকুয়া ও ঈদগাঁহ থেকে খিরা ক্রয় করতে আসা ব্যবসায়ী মোঃ জাহাঙ্গীর,মোহাম্মদ রশিদ, শাহাদাত হোছাইন জানান, কুতুবদিয়া থেকে প্রতিদিন দু’শ থেকে আড়াইশ মণ খিরা ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যায়, অন্যান্য বছরের চেয়ে এই বছর খিরার দাম বাড়তি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানকার মাটি ও জমির শ্রেণি খিরা চাষে উত্তম। সেই কারণে প্রতি বছরই এ চাষ বাড়ছে। কুতুবদিয়ায় গ্রীন কিং ও তিতুমির এফ ওয়ান এই জাতের খিরা চাষ হয়। সমন্বিত পদ্ধতির মাধ্যমে প্রায় সারা বছরই খিরার চাষ সম্ভব। একজন কৃষক ৪০ শতকের জমিতে প্রায় ৭৫-৮৫ দিনে খিরার চাষ করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ করতে পারেন। কৃষি বিভাগ থেকে চাষীদের সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান।

আরও পড়ুন