বাংলাদেশগামী অস্ত্রবোঝাই বিমান বিধ্বস্ত: গ্রিসের প্রতিবাদ, মুখ খুললেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট

গত শনিবার ইউক্রেনের একটি অস্ত্রবোঝাই কার্গো বিমান সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশে আসার পথে গ্রিসের একটি শহরে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় ওই বিমানের আটজন আরোহীর সবাই নিহত হন। সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, বিমানটিতে প্রায় ১২ টন অস্ত্র ছিল। সার্বিয়া থেকে জর্ডান যাওয়ার পথে সেটি বিধ্বস্ত হয়।

ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বিমানটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জন্য কেনা মর্টার শেল ছিল, কোনো অস্ত্র ছিল না।

সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী নেবোসা স্টেফানোভিচ বলেন, বিমানে ইলুমিনেটিং মর্টার মাইন এবং ট্রেনিং (মাইন) ছিল। এক্ষেত্রে, আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ যতো ধরনের অনুমোদন দরকার তার সবই নেওয়া হয়েছিল।

গ্রিসের গণমাধ্যমের বরাতে আরব নিউজ সহ অনান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়ঃ বিমানটি ১২ টন “বিপজ্জনক সরঞ্জাম” বহন করছিল, যার বেশিরভাগই ছিল বিস্ফোরক।

এ নিয়ে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে গ্রিস সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদলিপিও দায়ের করেছে এই অভিযোগে যে দেশটি গ্রিস অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া “বিপজ্জনক” সরঞ্জামের খবর জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। রেডিও ফ্রি ইউরোপ এ খবর নিশ্চিত করে বলেছেঃ সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন যে ফ্লাইটটি “আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী” তার কার্যক্রম চালিয়েছিল।

অবশ্য গ্রিসের রক্ষণশীল সরকার বিষয়টি নিয়ে নিজেও তীব্র চাপের মুখে রয়েছে। দেশটির বিরোধী দলগুলো সরকারকে কার্গো বিমানটি সম্পর্কে তথ্য না দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করছে এবং ঘটনাটি অধিকতর তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। ইউ এস নিউজ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই গ্রিসে এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। দেশটিকে বিধ্বস্ত বিমানের ‘প্রকৃতি” সম্পর্কে অবহিত না করায় সার্বিয়া এবং ইউক্রেনকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

অবশ্য সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিক রাজধানী বেলগ্রেডে এক সম্মেলনে বলেছেন, “এটি একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কিন্তু বিমানটি বিপজ্জনক কনো সরঞ্জাম বহন করছিল না।” তিনি জানান, বিমানটিতে কেবল ট্রেনিং এবং লাইটিং মাইন ছিল। এ খবর দিয়ে আনাদুলু এজেন্সী জানাচ্ছেঃ ভুসিক বলেছেন, রাশিয়া এবং বেলারুশের বিমানগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কারণে সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশে গোলাবারুদ পরিবহনের জন্য ইউক্রেনের কোম্পানির বিমান নেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে আরেকটি কারণ হলো, শুধু ইউক্রেনের কাছেই ভারী সরঞ্জাম এবং অস্ত্র বহন করতে সক্ষম বড় ধরনের চার ইঞ্জিনের বিমান রয়েছে।

আরও পড়ুন