লন্ডনে আয়োজিত হলো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান

লন্ডনে গ্রেটার ম্যানচেস্টার চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ ও চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৯ মে দুপুরে ওল্ডামস্থ গ্রান্ড ভ্যানুতে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ফয়সাল কবির নিক্সন।
সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল চৌধুরী, এটি এম হুমায়ন কবির এবং মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ম্যানচেস্টার গরটন থেকে নির্বাচিত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সংসদ সদস্য আফজাল খান সিবিই, টেমসাইড কাউন্সিলের মেয়র মিসেস তাজফিস শরীফ, ওল্ডহাম কাউন্সিলের ডেপুটি লিডার কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার এমবিই, গ্রেটার ম্যানচেস্টারের ডেপুটি লেফটেন্যান্ট মুজাহিদ খান, বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন, ম্যানচেস্টারের কাজী জিয়াউল হক এবং বিমান বাংলাদেশ ম্যানচেস্টারের ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান।

এছাড়া অন্যানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নর্থ ওয়েষ্টের বিভিন্ন কাউন্সিলের কাউন্সিলর, নাট্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাহিত্যিক এবং সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধিসহ ইউকের প্রায় ১৮টি শহর থেক প্রায় তিন হাজার চট্টগ্রামবাসী। বিশেষ করে গ্রেটার চট্রগ্রাম এসোসিয়েশন ইউকের নেতৃবৃন্দ , চট্রগ্রাম সমিতি ইউকের নেতৃবৃন্দ, ফটিকছডি কমিউনিটি ইউকের নেতৃবৃন্দ , সীতাকুন্ড সমিতি ইউকেসহ আরো অনেক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামের মেজবান তার ঐতিহ্যবাহী আতিথেয়তা ও বিশাল আয়োজনের জন্য পরিচিত। এই প্রথাগত ভোজ উৎসবে সমাজের সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং গরুর মাংস, বুটের ডাল , গরুর নলা সহ অন্যান্য সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করা হয়। মেজবান মূলত সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে এবং সম্প্রীতির মেলবন্ধন সৃষ্টি করতে সহায়ক হয়।

মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবাসীদের সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন মিসেস সাঈদা মুনা তাসনিম। চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাকে সম্মানসূচক আজীবন সদস্যপদ ও অভিনন্দন স্বারক প্রদান করা হয়।

সমসাময়িক গাজা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন ব্রিটিশ এমপি আফজাল খান। তিনি গাজা নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদী হওয়ার পরামর্শ দেন। কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ বিমানের প্রশংসা করেন।
ডেপুটি লেফটেনেন্লেট মুজাহিদ খান ব্রিটিশ ও বাংলাদেশীদের মধ্যে সেতুবন্ধন আরো জারালো করার উপর প্রয়াশ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে চট্টগ্রামের কৃতি ছাত্রছাত্রীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া কৃতি সন্তান, ইংল্যান্ডের সনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় এইজহীলের প্রাক্তন শিক্ষক তাসলিম সাকুরের লেখা বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের নর্থ ওয়েস্ট কর্মকাণ্ড বিষদ বিবরণযুক্ত বইটি মোড়ক উন্মোচন করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ফয়সাল কবির নিক্সন।

ফয়সাল কবির নিক্সনেকে ইউকের মহামান্য কিং এর উপাহার ব্রোচ পরিয়ে দেন টেম সাইড মেয়র সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রাখার জন্য।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় ডক্টর এন এইচ এস খানকে ১৯৯৫ সালে এই সংগঠনের প্রথম অনুষ্ঠানের ব্যানার নিজ হাতে লেখার স্বীকৃতি স্বরূপ।

মেজবানের জন্য চট্টগ্রাম থেকে বিশেষভাবে আনা মসলা ও রান্নার ভূয়সী প্রশংসা করেন আগত অতিথিবৃন্দ।

এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশন নতুন প্রজন্মের কাছে তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে ও সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। অনুষ্ঠানের সফলতায় বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম চট্টগ্রামের ঐতিহ্য সম্পর্কে গভীর ধারণা পাবে।