কক্সবাজারের পেকুয়ায় হাতুড়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনক নড়ে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের। অবশেষে সেই হাতুড়ে ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
২০ জুলাই দুপুর ১ টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি টিম ভূয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে এ অভিযান পরিচালনা করেন।
এসময় অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের নোয়াখালী ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় অনূকূল ফার্মেসীতে অভিযান পরিচালনা করেন। ওই ফার্মেসীতে রোগী দেখেন গৌতম কুমার চৌধুরী নামের এক পল্লী চিকিৎসক। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে সেই ভূয়া ডাক্তার গৌতম কুমার চৌধুরী চেম্বার থেকে পালিয়ে যায়। পরে ওই ফার্মেসীর বৈধ কাগজপত্র না পাওয়াই ওই ফার্মেসী ও ভূয়া ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। একই দোকানে সব রোগের চিকিৎসা দেওয়ার সত্যতা পায়। অভিযান টিম ওই দোকানে এলোপ্যাথিক ওষুধের সাথে হোমিওপ্যাথিক এবং কবিরাজি ওষুধ রাখার যথাযথ প্রমান পেয়েছেন। এমনকি ওই ফার্মেসীর পিছনে একটি বেড বসিয়ে রোগী ভর্তি রেখে স্যালাইন দেওয়ার আলামত উদ্ধার করেন।
এসময় অভিযান টিমে উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডাঃ ইমরুল কায়েস ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর এমও ডাঃ মুজিবুর রহমান।
উল্লেখ্য যে, কাউসারা বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধূ ওই ভূয়া ডাক্তার গৌতম কুমার চৌধুরীর ভূল চিকিৎসায় হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। সে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী এলাকার মো.পারভেজের স্ত্রী।
গৃহবধূ কাউসারা বেগমের ভাই শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার বোনের শরীরে বাত রোগ নিয়ে গত ২২ মে বারবাকিয়া ইউনিয়নের নোয়াখালী ব্রীজ সংলগ্ন অনূকূল ফার্মেসীর পল্লী চিকিৎসক গৌতম কুমার চৌধুরীর কাছে গিয়েছিল। ওই ভূয়া ডাক্তার আমার বোনকে দেখে ১১টি ওষুধ লিখে একটি পরামর্শপত্র দেন। আমার বোন সেই ওষুধ সেবন করে রোগ মুক্তি হওয়ার তো দূরের কথা দিন দিন আরো অবনতি হয়ে পা ফুলে গিয়ে হাঁটাচলা অচল হয়ে যায়। এ অবস্থায় আমার বোনকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার বোনের পা কেটে পেলার পরামর্শ দেন।
আমার বোন জানে না সে যে ভূয়া ডাক্তার। এ বিষয়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার প্রতিবাদ করলে স্থানীয় কিছু লোকজনের সহায়তায় উল্টো গালিগালাজ করে পরিণতি খারাপ হবে বলে হুমকি দেয়। আমি নিরূপায় হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউ এইচ ও কে অভিযোগ করি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচ ইউ) ডা: মো.মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করি গৌতম কুমার চৌধুরী নামের এক ভূয়া ডাক্তারের চেম্বারে। এসময় একই সাথে এলোপ্যাথিক ওষুধের সাথে হোমিওপ্যাথিক এবং কবিরাজি ওষুধ রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায় না। সে এ ধরণের ভূয়া চিকিৎসা দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে। তাই ভূয়া ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিয়েছি। পরে কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।