কক্সবাজারের পতিত বনভুমিতে ২০ লাখ গাছের চারা রোপন

বনউজাড়ে ৩০ বছর যাবত পতিত বনভুমিতে নতুন ভাবে সবুজায়ন করা হচ্ছে। কক্সবাজারের রামুরকচ্ছপিয়া, ঘিলাতলি ও জঙ্গল গর্জনিয়া মৌজা এলাকায় প্রায় ৭৬৫ হেক্টর পতিত বনভুমিতে রোপনকরা হয় বিভিন্ন প্রজাতির ২০ লাখ চারা গাছ। বনায়নকে ঘিরে এলাকার তিন হাজারের অধিকদরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরাবলছেন, বনপ্রাণীর বাসস্থান নষ্ট, জৈব বিন্যাসের ক্ষতি ও অনুর্বরতা রোধে পতিত সব বনভুমিকেপর্যাক্রমে সবুজায়নের পাশাপাশি বননির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্প জীবিকার উদ্যোগ নেয়া হবে।

কক্সবাজারউত্তর বনবিভাগের আওতাধীন বাকখালী রেঞ্জের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া, ঘিলাতলি ও জঙ্গলগর্জনিয়া মৌজার বিভিন্ন স্থানে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গাছপালাকে কেটে বন উজাড় করেনবনদস্যুরা। এতে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট , জৈব বিন্যাসের ক্ষতি ও অনুর্বরতা সৃষ্টি হয়েছে।এলাকাগুলোর খুব বেশি ভূমিক্ষয় ও পতিত জমিতে পরিণত হয়। এভাবে প্রায় ৩০ বছর পেরিয়ে যায়।তিনদশক পর ওই পতিত বনভুমিতে নতুন করে বন সৃজনের উদ্যোগ বনবিভাগ।২০২২-২০২৩অর্থ বছরে সুফল নামে প্রকল্পের আওতায় বাকখালী বিটের উখিয়ার ঘোনা হেক্টর, ঘিলাতলি বিটের বেলতলি, থিমছরিতে হেক্টর, কচ্ছপিয়া বিটের নদীর পশ্চিমকুল ও দুছরিএলাকায় হেক্টরসহ মোট ৭৬৫ হেক্টর জমিতেবনায়ন সৃজন করা হয়েছে।

স্থানীয় শ্রমিকরা জানান, নার্সারী সৃজন, জঙ্গলকাটা, চারারোপন, বাগান রক্ষনা বেক্ষন ও বাগানপাহারায় স্থানীয় জনগোষ্টির ৪৯০ জন মানুষের সালে তিন বছরের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে ।ঘিলাতলিবন বিট কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খান জানান, চারাগাছ গুলো দিনদিন বেড়ে উঠছে। ওষুদিগাছ বাগানের সর্বত্র দেখা মেলে। প্রায় ৩০ বছর পূর্বে বিলীন হওয়া বনে পুনরায় বনায়ন সৃজনও সঠিক পরিচর্যায় কারণে সর্বত্র চোখ জুড়িয়ে যায়।বাকখালীরেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা সারওয়ার জাহান বলেন, দেশীয় প্রজাতির গামারী, চিকরাশ, অর্জুন,আমলকি, হরতকি, বয়েরা, কদম, কৃষ্ঞ চুড়া, বট, সোনালো, চাপালিশ, গর্জন, শাল,নিম সহ ২৮ প্রজাতির প্রায় ২০ লাখ চারা গাছ রোপন করা হয়েছে। বন বিভাগের পতিত জায়গাতেসবুজ বনাঞ্চল গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।
ইতোমধ্যে সৃজিত বনায়নে দুই বার উডিং করা হয়েছে।এর আগে বনায়নে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরষ্কারও অর্জন করেছে। সুফল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলেদুই-তিন বছরের মধ্যে কক্সবাজারে ন্যাড়া ও পতিত পাহাড় আর দেখা যাবে না ।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, বনসংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষে বননির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্পজীবিকার সংস্থানসহ নানান উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে বনের ওপর মানুষের চাপ কমে আসবে।

সুফলপ্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ, বনজ ও ঔষধির কয়েক লাখ চারা বিতরণ ও রোপণ করেছেকক্সবাজার উত্তর বনবিভাগ। সুদীর্ঘ পথচলায় ২০২০ সালে সফল ‘বনায়ন’ এ প্রধানমন্ত্রীর জাতীয়পুরস্কার পান বাকখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা। এধারা অব্যাহত রাখবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

আরও পড়ুন