কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন গত ৬ মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ৪ লক্ষ ইয়াবা ১৫টি দেশী-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও ১হাজার ৪শ ১৬জন ও সাতটি হত্যা মামলার ২৯জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে।
রোববার(৩ জুলাই) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক মো. নাইমুল হক।
তিনি বলেন,৩৩ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৫ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা দিয়ে আসছে ১৪ এপিবিএন।
রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীদের দমনে ১৪ এপিবিএন সব সময় সাহসী সব পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। দীর্ঘদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প শান্ত থাকার পর গত মাসে ১৪ এপিবিএন এর আওতাধীন এলাকায় ৩ টি মার্ডার হয়। হত্যাকান্ড হবার পরপরই মামলা রুজু হবার পর ১৪ এপিবিএন পুলিশ দৃপ্ত পদক্ষেপে এজাহার নামীয় অধিকাংশ আসামিকে গ্রেফতার করে। হত্যাকাণ্ডের পর আসামিদের গ্রেপ্তার এবং তথাকথিত বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতারে ১৪ এপিবিএন স্থায়ী চেকপোস্ট সহ বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী চেকপোস্ট, ফিক্সড পোস্ট,ব্লক রেইড সহ বিভিন্ন ধরনের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
মাদক,অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন,”২০২২ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩০ শে জুন পর্যন্ত ১৪ এপিবিএন পুলিশ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলা সমুন্নত এবং স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে বিভিন্ন ধরনের অভিযান পরিচালনা করে । গত ছয় মাসে এ পর্যন্ত ৩ টি বিদেশি পিস্তল,১২ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র,২০ রাউন্ড গুলি,১৭ রাউন্ড কার্তুজ , ৩টি ম্যাগজিন,২০০ এর অধিক বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ সংক্রান্তে গত ৬ মাসে ১৫ টি অস্ত্র মামলা রুজু হয় এবং ১৯ জন অবৈধ অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করা হয়। ক্যাম্প এলাকায় ডাকাতি করার মুহূর্তে ডাকাতদের গ্রেপ্তার করে ১০ টি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলা রুজু করে এবং ৫২ জন রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীকে আটক করে। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত ছয় মাসে ৩লাখ ৯৩হাজার ৫শ ১৯ পিস ইয়াবা, গাজা ৩ কেজি ৬৯ গ্রাম ,বিয়ার ক্যান ১৮৮, ১২ বোতল হুইস্কি, বাংলা মদ ৬ হাজার ২শ ৫৪ মিলি ও মাদক ক্রয় বিক্রয়ের ৯ লাখ ৩৬হাজার ৭শ ৩০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সংক্রান্তে মামলা রুজু করা হয় ১৫৪ টি,এবং ২০৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
নাইমুল হক আরও জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে ১৪ এপিবিএন। গত ৬ মাসে এপর্যন্ত ২শ ২৬ গ্রাম স্বর্ণ,১২হাজার ৮শ ৪০ কেজি চাল,১হাজার ১শ ৯৫ কেজি চিনি,১হাজার ৮শ ২৩ লিটার সয়াবিন তৈল, ৮শ ১৪ কেজি ডাল,২শ ১৭ কেজি সুজি সহ আরো অনেক চোরাচালান পন্য আটক করে। ৫শ ৬১ জন রোহিঙ্গা কে মোবাইল কোর্ট দ্বারা ৫ লাখ ১হাজার ৩শ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ৫৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়।
১৫ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে গত ছয় মাসে ২০১ একটি মামলা দায়ের করে এবং ১৪১৬ জন রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীকে আটক করা হয়। যার মধ্যে কথিত আরসার সদস্য রয়েছে ৪১৪ জন এবং মুন্না গ্রুপের সদস্য রয়েছে ৯ জন।