বিএনপি দিবা স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঢেঁকুর তুলছে : রাঙ্গুনিয়ায় তথ্য মন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “দেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে তারা এখনো নানামূখী ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের দেশে একটি দল নেমে পড়েছে, যারা সবময় গুজব রটায় এবং মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতেও তারা এখন একইরকমভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।”

শুক্রবার (২২ জুলাই) নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা উপজেলা সদর ইছাখালীস্থ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে পৃথিবীতে। এখন বিশ্বের অনেক উন্নত দেশগুলোতেও সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। উন্নত দেশগুলো অর্থ সাশ্রয় করার জন্য নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে সরকার লোডশেডিং করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এটি নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের সরকার গত অর্থবছরে জ্বালানী এবং বিদ্যুৎখাতে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। সরকারের পক্ষে কতটুকু ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব সেটা ভাবা উচিত। এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ হয়েছে, গ্রামের মধ্যেও এখন টেলিভিশন এসি, ফ্রিজ প্রত্যেকের ঘরে ঘরে। অনেক ধর্মীয় উপাসনালয়ে এখন এসি রয়েছে। কিন্তু আমরা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হচ্ছি না। বিদ্যুতের অপব্যবহার যাতে না হয়, সেজন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য আহবান জানিয়েছেন। উন্নত দেশগুলোতেও এই আহবান জানানো হয়েছে। সেখানেও এখন লোডশেডিং হচ্ছে। যা আগে কখনো হয়নি।

বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, “তাদের সময় তো তারা খাম্বা দিয়েছিলো, বিদ্যুৎ দিতে পারে নাই। রাঙ্গুনিয়া পৌরসভায়ও দুয়েকটি জায়গায় বিদ্যুৎ ছিলো। সারা দেশেই একই অবস্থা ছিলো। এখন ঘরে ঘরে প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। এমনকি দ্বীপ উপজেলা স›িদ্বপেও সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নিয়ে বিদ্যুৎ দিয়েছে। বিভিন্ন দ্বীপে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ নিয়ে গিয়ে সেখানে মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।”

পদ্মাসেতু নিয়ে গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যখন পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিলো, তখনও নানামূখী ষড়যন্ত্র ছিলো। পদ্মাসেতুর অর্থায়ন তারাই ষড়যন্ত্র করে বন্ধ করে দিয়েছিলো। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনার সফলতা।

তিনি বলেন, পদ্মাসেতু নির্মাণ হওয়ার সময় তারা ছেলেধরা গুজব ছড়িয়েছিলো। করোনার টিকা নিয়েও তারা গুজব রটিয়েছিলো। এমনকি পদ্মাসেতুর উদ্বোধন নিয়েও তারা নানাধরণের গুজব রটিয়েছেন, ছাত্রদলের অনেকে গিয়ে পদ্মাসেতুর নাট-বল্টু খুলেছেন। আবার সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিয়েছেন।

দলীয় নেতাকর্মীদের চোখ-কান খোলা রাখার আহবান জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকতে হবে, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত আমি দলের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অংশগ্রহণ করে থাকি। গত দুই বছরে এই করোনার মাঝেও করে যাচ্ছি। সারাদেশে আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠনগুলো যেভাবে উজ্জিবিত আছে, আমরা যদি আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে পারি, তাহলে আমরা আবারও ধস নামানা বিজয় নিশ্চিত করতে পারবো ইনশাল্লাহ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনা বর্ধিত সভায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন