মিরসরাইয়ে বউ গেলো পরপারে, জামাই গেলো কারাগারে

শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় না পেয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। মিরসরাই উপজেলার ধুম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুম গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহতের স্বামী, শশুর, শাশুড়িসহ ৫জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে প্রেম করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের মলিয়াইশ গ্রামের নিরঞ্জন দাসের কন্যা রুপনা দাস ও ধুম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধূম গ্রামের রাখাল কুমার দের ছেলে রুপম কুমার দে। বিয়ের পর থেকে শশুর বাড়ির লোকজন রুপনাকে গৃহবধূ হিসেবে মেনে নিচ্ছিলো না। তবে তার স্বামী রুপম এবং সে মিরসরাই সদরে একটি বাসা ভাড়া করে বসবাস করতো। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। এরপর রুপম রুপনাকে ছেড়ে চলে যায়। পরে অসহায় রুপনা তার দুই বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে একাধিকবার শশুর বাড়িতে আশ্রয়-অধিকার চান। কিন্তু কিছুতেই মিলছিলো না আশ্রয়। শেষতক গত সোমবার (১৮ জুলাই) বিকাল ৪টার নাগাদ নিজের কন্যা সন্তানকে নিয়ে পুনরায় শশুর বাড়িতে গেলে আবারও তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বাড়ির লোকজন। এসময় উপয়ান্তুর না পেয়ে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় গৃহবধূ রুপনা।

পরে স্থানীয়রা তাকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ভোর ৬টার নাগাদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে মারা যান।

এ ঘটনায় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ রুপনার স্বামী রুপম কুমার দে, শশুর রাখাল কুমার দে, শাশুড়ি বেলা রানি দে, ভাসুর কাঞ্চন কুমার দে ও জা উর্মিকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে।

জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নূর হোসেন মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোমবার বিকালে ধূম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধূম গ্রামে গৃহবধূ রুপনা দাস নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে তাকে চমেক বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে মারা যায়।

এ ঘটনায় রুপনা দাসের স্বামী, শশুর, শাশুড়ি, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূ রুপনা দাসের বড় বোন বিউটি দাস বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা (যার নম্বর ৭) দায়ের করেছেন।

আরও পড়ুন