আনোয়ারার দুঃখ সাপমারা খালের বাঁধ

আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ও বারশত ইউনিয়নের মাঝামাঝি পারকি এলাকায় সাপমারা খালের উপর নির্মিত বাঁধে তিন ইউনিয়নের কৃষি চাষ, মৎস্য ঘের ও ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হাওয়ায় অন্তত পাঁচ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। টানেল সার্ভিস এরিয়ার উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান কাজ করতে ২০১৯ সালে তিন মাসের জন্য এই বাঁধ নির্মাণ করা হলেও তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদার এই বাঁধ অপসারণ না করায় স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে বাঁধ সরাতে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এখন খালে নতুন করে ব্লক বসালে কৃষকদের মাঝে শঙ্কার সৃষ্টি হয়। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মানব বন্ধন করবেন বলে জানান কৃষকরা। তবে টানেল সার্ভিস এরিয়ার ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ খোকন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৯ সালে বারশত ও রায়পুর ইউনিয়নের পারকি ও ফুলতলা মৌজায় বঙ্গবন্ধু টানেল সার্ভিস এরিয়ার আবাসিক প্রকল্পের কাজ শুরু করেন চায়না কমিউনিকেশনস কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিেিটড (সিসিসিসি)। সিসিসিসি কোম্পানি থেকে সাব ঠিকাদারী হিসেবে প্রকল্পটির কাজ নেনে মোনায়েম কন্সট্রাকশান লিমিটেড। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে ঠিকাদার প্রকল্পের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া সাপমারা খালে বাঁধ নির্মাণ করে পানি চলাচল বন্ধ করে দেন। এসময় স্থানীয়রা পানি চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা করার দাবী জানালেও ঠিকাদার তিন মাস পর এ বাঁধ সরিয়ে নেবে বলে আশ^স্ত করেন। কিন্তু সাড়ে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও বাঁধ অপসারণ না করায় স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। এ বাঁধের কারণে কর্ণফুলী নদী থেকে শঙ্খ নদীতে প্রবাহিত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সাপমারা খালে পানি ও নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। গত আগষ্টের শুরুতে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে রায়পুর, বারশত ও বটতলী ইউনিয়নের ১৫ গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসময় স্থানীয়রা বাঁধ কাটার দাবী জানালে ঠিকাদার ২ দিনের সময় নিয়ে পরে আর কাটেনি।

বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ূম শাহ্ বলেন, বাঁধের কারনে কয়েক বছর ধরে রায়পুর,বারশত ও বটতলী ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এখন তারা নতুন করে খালে ব্লক বসিয়ে উঁচু করছে। এতে করে স্থায়ী ভাবে পানি চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হবে। যার ফলে আমাদের তিন ইউনিয়নে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। তাই মানুষের ক্ষতি যাতে না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই উন্নয়ন কাজ করার দাবী জানাচ্ছি।

তবে টানেল সার্ভিস এরিয়ার ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ খোকনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, তিন ইউনিয়নে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে আমি বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানকে বলেছিলাম। জনগণের ক্ষতি যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে উন্নয়ন কাজ হবে। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।

আরও পড়ুন