কে হচ্ছেন দোহাজারী পৌরসভার প্যানেল মেয়র

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ছয় বছর পর প্রথমবারের মত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ১৭ জুলাই। ইভিএম পদ্ধতির ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান হাকিম তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে ১৬হাজার ৮৪৯ ভোটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন।

গত ২৬জুলাই সরকারি গেজেট প্রকাশের পর গত ১০আগস্ট শপথ গ্রহণ শেষে ১৭আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নবনির্বাচিত মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান হাকিম। ওইদিন দোহাজারী পৌরসভা কার্যালয় প্রাঙ্গণে পৌরসভা কর্তৃক আয়োজিত এক আড়ম্বর অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত মেয়রের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন বিদায়ী পৌর প্রশাসক ও চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা বেগম।

মোহাম্মদ লোকমান হাকিম মেয়রের চেয়ারে বসলেও প্যানেল মেয়র কে হচ্ছেন? তিন সদস্যবিশিষ্ট মেয়রের প্যানেলে কারা থাকছেন? এ নিয়ে আগ্রহ ও উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। পৌরবাসীর মধ্যেও চলছে নানা আলোচনা। নবনির্বাচিত পৌর পরিষদের ৯জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৩ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলরের মধ্যে মেয়রের প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হতে চান ৬জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ২জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর।

তাঁরা হলেন- ২নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহা. শাহ্ আলম, ৩নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ৪নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পহর উদ্দিন, ৫নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইদ্রিস, ৬নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মহিউদ্দিন, ৭নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলমগীর। সংরক্ষিত ২নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমতাজ বেগম ও সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা রাজু। আর এই বিষয়টির কারণেই প্যানেল মেয়র নির্বাচনে আগ্রহ ও উত্তেজনায় বাড়তি খোরাক জুগিয়েছে।
পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ৪০ (১) ধারায় বলা আছে পৌরসভার প্রথম সাধারণ সভার এক মাসের মধ্যে প্যানেল মেয়র নির্বাচন করতে হবে। তবে নবনির্বাচিত পৌর পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেও প্রথম সভার তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ৮ (৩) ধারায় বলা আছে সরকারি গেজেটে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরগণের নাম প্রকাশের ত্রিশ দিনের মধ্যে প্রথম সভা অনুষ্ঠান করতে হবে।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ৪০ ধারা মতে ‘প্যানেল মেয়র’ বলতে বোঝায় নির্বাচিত মেয়রের অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য যে কোন কারনে মেয়র দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত মেয়রের প্যানেল থেকে অগ্রাধিকারক্রমে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মধ্য থেকে একজন মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন। এই ব্যক্তি নির্বাচিত মেয়রের পদত্যাগ, অপসারণ, মৃত্যু অথবা অন্য যে কোন কারনে মেয়রের পদ শূণ্য হলে নতুন কেউ মেয়রের কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।

পৌরসভা গঠিত হবার পর অনুষ্ঠিত প্রথম সভার এক মাসের মধ্যে কাউন্সিলর গণ অগ্রাধিকারক্রমে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি মেয়রের প্যানেল তাদের নিজেদের মধ্য হতে নির্বাচন করবেন। এবং নির্বাচিত তিন জনের মেয়রের প্যানেলের মধ্যে একজন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর হতে হবে। অর্থাৎ তিন জন নিয়ে ‘প্যানেল মেয়র’ গঠিত হলেও প্রয়োজনের সময় মূল দায়িত্ব পালন করবেন একজন।

পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ৪০ এর (৪) ধারা অনুযায়ী মেয়রের প্যানেলভুক্ত কোন সদস্যকে পরবর্তীতে অযোগ্য মনে হলে অথবা ওই ব্যক্তি নিজে ব্যক্তিগত কারনে দায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করলে একমাসের মধ্যে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য অন্য কোন কাউন্সিলরকে মেয়রের প্যানেলভুক্ত করা যাবে।

পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ৪০ এর (৫) ধারার উপ-ধারা ১ ও ৪ এ বলা আছে কাউন্সিলরদের মধ্য থেকে মেয়রের প্যানেল নির্বাচন করা না হলে সরকার প্রয়োজন অনুসারে মেয়রের প্যানেল তৈরি করে দিবে।

আরও পড়ুন