শাসক নয়, বাঁশখালীবাসীর সেবক হতে চাই : এডভোকেট জিয়াউদ্দিন

বঙ্গবন্ধুর একজন নগন্য সৈনিক হিসেবে দলের আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে দীর্ঘকাল মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার অবিরত চেষ্টা করেছি। দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালনে শতভাগ আন্তরিকতা পোষণ করেছি। তৃণমূলের একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বাঁশখালীবাসীর সাথে ছিলাম আছি থাকবো ইনশাল্লাহ। বৃহত্তর পরিসরে বাঁশখালীবাসীর সেবার মানসে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাইবো। দল সুযোগ দিলে প্রান্তিক এ জনপদের সহজ সরল মানুষকে নিয়েই বাকী জীবন কাটিয়ে দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এডভো‌কেট এএইচএম জিয়াউদ্দিন।

শনিবার (৫ আগস্ট ) বিকালে বাঁশখালীর পৌর সদরের একটি রেস্টুরেন্টে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

এসময় তিনি বলেন, একজন সংসদ সদস্যের কাছে তার এলাকার মানুষ সহজে যাওয়ার সুযোগ চায়, ভাল ব্যবহার চায়, বিপদে আপদে তাদের কথা শোনাতে চায়, সরকারী উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সুসম বন্টন চায়, এলাকার মানুষের খোঁজ খবর রাখবেন সেটা চায়। আমি তাদের সে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যে সেতুবন্ধন ঘটাতে চাই। আমি বলতে চাই, আমি প্রান্তিক জনপদের রাজনৈতিক কর্মী। তিলে তিলে নিজেকে দলীয় আদর্শ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একজন পরিক্ষীত সৈনিকে পরিণত করেছি। সুতরাং এলাকার মানুষের সেবাই হবে আমার প্রধান ব্রত। মনোনয়ন না পেলেও তিনি দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অনুপম কুমার দে অভি, উজ্জ্বল বিশ্বাস, কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, শফকত চাটগামী, শাহ্ মু. শফিউল্লাহ, আবদুল মতলব কালু, আবু বক্কর বাবুল, আব্দুল জাব্বার, জোবাইর চৌধুরী, সৈকত আচার্য্য, মিজান বিন তাহের, শিব্বির আহমদ রানা, তাফহীমুল ইসলাম ও আফনান চৌধুরী প্রমূখ।

এডভোটেক জিয়াউদ্দিনের সংক্ষিপ্তি পরিচিতি ::  বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এডভোকেট আবদুস সবুরের ৬ষ্ঠ সন্তান এডভোকেট জিয়া। তার পিতা সবুর ১৯৭৩ সালে তিনি রেডক্রস চট্টগ্রামের সহ সভাপতি নিযুক্ত হন। এডভোকেট জিয়ার পিতা আবদুস সবুর কলকাতা ইসলামীয়া কলেজে অধ্যয়নকালে বেকার হোস্টেলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রুমমেট ছিলেন। আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে আমৃত্যু দলের জন্য কাজ করেন।

এডভোকেট জিয়ার মাতা মরহুমা বেগম মমতাজ চৌধুরী ছিলেন একজন সুসাহিত্যিক। তিনি মমতাজ সবুর নামে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। তাঁর মৌলিক গ্রন্থের সংখ্যা ছয়টি। তিনি ২০০২ সালে চট্টগ্রাম ডাইজেস্ট কর্তৃক রত্নগর্ভা মা পুরস্কারে ভূষিত হন।

এডভোকেট জিয়ার দাদা মরহুম আবদুল লতিফ খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ডিস্ট্রিক চেয়ারম্যান) ৭ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর নানা এএইচএম মোফাখখর ছিলেন একজন প্রথিতযশা আইনজীবী। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন।

এডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি পরিবারের ৬ষ্ঠ সন্তান, ভাইদের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাঁর বড় ভাই এএইচএম কফিল উদ্দিন (মাস্টার্স একাউন্টিং) এলিট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের জেনারেল ম্যানেজার। মেঝভাই প্রথিতযশা আইনজীবী বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দিন তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে রাজনীতি, সমাজসেবা ও আইন সেক্টরের বিভিন্ন শীর্ষ পদে গুরু দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দীর্ঘ সময়ে দলের দুঃসময়েও তিনি চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামী রাজনীতিকে চাঙ্গা রাখেন। তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ও কর্মতৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। তিনি সফল সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ও নতুন কার্যকরী কমিটি উপহার দেন।

এডভোকেট জিয়া ১৯৮৯ সালে পাথরঘাটা ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৯৪ সালে বঙ্গবন্ধু ল’ টেম্পল ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি ও ১৯৯০ সালে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সদস্য নিযুক্ত হন। এডভোকেট জিয়া উদ্দিন ১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও ১৯৯৬ এর গণ আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

তিনি ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির টানা ৩ বারের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

এছাড়াও তিনি বাঁশখালী সমিতি চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সেবামূলক সংগঠনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছেন।

আরও পড়ুন