শেগুফতা নাসরীন আইরিন :: অসম্ভব সাহসী ও প্রত্যয়ী নেতৃত্বের দীক্ষায় বেড়ে ওঠা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মানুষের কণ্ঠ আত্মস্থ করতে পেরেছিলেন বলেই তিনি হয়েছেন বঙ্গবন্ধু। দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক এ নেতা কখনওই রাষ্ট্রনায়ক হতে চায়নি, চেয়েছেন এদেশের মানুষের মুক্তি তথা উন্নতি। তেজোদীপ্ত নেতৃত্বের ভিতরে বাইরে আপাদমস্তক মানবিক গুণাবলী তাঁকে কখনওই শাসকের আবহে বন্দী হতে দেয়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রান্তিক মানুষের হৃৎস্পন্দন অনুধাবন করেছিলেন বলেই তার মহত্ব রাষ্ট্রপতি/প্রধানমন্ত্রীকে ছাপিয়ে গেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী এদেশে সু-শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি বিভাজন ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে কাজ করার চেষ্টা করেছিলেন। হিংসা বিদ্বেষ কখনও তাঁকে ছুঁতে পারেনি বলেই মুক্ত স্বাধীন, প্রটোকলবিহীন জীবনযাত্রা বেশি পছন্দ করতেন।
বঙ্গবন্ধুকে কেউ মারতে পারে কিংবা তার শত্রু থাকতে পারে তিনি তা বিশ্বাসই করতেন না। জীবনের সকল মায়া-মমতা, সম্পত্তি, সুদৃঢ় অবস্থান যাঁকে কখনওই টানেনি এদেশের মানুষের মায়ায় পড়ে, সেদেশেরই কেউ তার মতো বিশাল বটবৃক্ষ হৃদয়ের অধিকারীকে খুন করতে পারেন, এটা অবিশ্বাস্য তার কাছে, দেশের আপামর মানুষের কাছে।
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো স্বনির্ভর আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণ। যেখানে থাকবেনা ধর্মীয় বিভেদ, দলীয় হানাহানি, সন্ত্রাস, লুটতরাজ, দুর্নীতিসহ দেশ পিছিয়ে যায় এরকম কোন কর্মকাণ্ড। বিপুল জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জনগণকে কাজে লাগিয়ে স্বকীয় স্বাধীন বাংলাদেশ। যেখানে পরনির্ভরতা পরিহার করে অর্থনীতিতে সবল, মজবুত পরিচয়ে গৌরবোজ্জ্বল সবুজ বাংলাদেশ।তাইতো তিনি মহাকাব্যের অমর কবি।
লেখক : শেগুফতা নাসরীন আইরিন, শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক।