সুন্দরবনের মধু আহরণ : পুলিশের হয়রানীর শিকার মধুচাষীরা

ইকবাল কবির, ঢাকা ব্যুরো চীফ :: সুন্দরবনে এখন চলছে মধু আহরণের উৎসব। সারাদেশের প্রায় ৩ হাজার মৌচাষী মধু সংগ্রহে তাদের চাক বসিয়েছেন। সুন্দরবন মৌচাষী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস.এম. আশিকুর রহমান সিটিজি সংবাদকে জানান, এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় হতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে মধু আহরনের প্রক্রিয়া।
আশিকুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা জেলার সুন্দরবন এলাকার শ্যামনগর থানার মীরগঙ্গা, চুনকুড়ি, শিহরতলী, হরিনগর ও কদমতলা এলাকায় চাক বসানো হয়। সুন্দর বনে এই সময়টিতে খলিসা, কেওরা, লতা, বাইন ও সুন্দরী ফুল থেকে মধু আহরিত হয়।
তিনি বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক) এর উদ্যোগে সারাদেশের ৩ হাজার মৌচাষী একত্রিত হই সুন্দরবনে। এবারও প্রায় একহাজার টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, মর্ডার হারবাল, এপি, স্কয়ার ও ভারতের ডাবর কোম্পানীসহ বহু কোম্পানী এই সময় মধু ক্রয়ে এ অঞ্চলে আসেন।
চাহিদার তুলনায় মধু কম আহরিত হওয়ায় এখন ২২ হতে ২৬ হাজার টাকায় এক মন মধু বিক্রয় হচ্ছে। যার ফলে এবার মধু’র দাম বাড়বে।
মধু চাষীদের সমস্যার কথা বলতে গিয়ে আশিকুর রহমান জানান, পুলিশী হয়রানী মূল সমস্যা। বিসিক তাদের সব সহযোগিতা করলেও পুলিশ মৌমাছি একস্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় মৌমাছির কাগজপত্র দেখতে চায়। আমাদের বিসিকের পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও হয়রানী করা হয়।
এছাড়া শ্যামনগর থানা পুলিশ মৌচাষীদের আটকে রেখে তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে জেলে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকিও দেয় বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, সরকার ও বিসিক মৌচাষিদের উৎসাহিত করতে সব রকম সহায়তা করলেও কেবল পুলিশই শুধু হয়রানী করে থাকে।
তিনি বলেন, মধু আহরন শেষে বিসিকের উদ্যোগে যদি শ্যামনগরের বনশ্রী শিক্ষা নিকেতন মাঠে অথবা হরিনগর বাজারে মধু মেলার আয়োজন করা হয় তবে মৌচাষীরা অনেক লাভবান হবে।
তিনি মৌচাষীদের সহযোগিতায় সুন্দরবন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও বিসিকের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, সুন্দর বনের এই মধু বিভিন্ন কোম্পানীগুলোর সহযোগিতায় সারা বিশে^ বাজারজাত হচ্ছে। তিনি বলেন, মৌচাষীদের আর্থিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হলে বাংলাদেশ মধু রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন