বিষ প্রয়োগে মুরগী মেরে একাকার, থামছেনা তরুণ উদ্যোক্তার হাহাকার
চট্টগ্রামের রাউজানে একটি পোল্ট্রিফার্মের খাদ্যের পাত্রে বিষ প্রয়োগ করে ১হাজারের বেশি মুরগীর বাচ্চাকে ‘হত্যা’ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাউজান পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের ছিটিয়াপাড়া হাসমত আলী চৌধুরী বাড়িস্থ একটি খামারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ৫-৬মাস আগে মুরগীর খামার গড়ে তোলেন বিনাজুরী ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত মো. হারুনের ছেলে মো. হামিদুল্লাহ সৌরভ। নোয়াপাড়া কলেজে একাদশ শ্রেণিত অর্ধয়নরত অবস্থায় গত দুই বছর আগে বাবা মারা গেলে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায় সৌরভের। বেকারত্ব গোছাতে ৬মাসের জন্য ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে মুরগীর শেড ভাড়া নিয়ে নিজের পায়ে দাড়ানোর স্বপ্ন বুনেন সৌরভ।
গত ৫দিন আগে প্রতিটি ৪১ টাকা করে ১৩৫০টি মুরগীর বাচ্চা ও প্রতিবস্তা সাড়ে ৩ হাজার টাকায় ৫বস্তা খাদ্য ক্রয় করে খামারে তুলেন। ঘটনার রাতে খামারের তারের বেড়া কেটে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে প্রতিটি মুরগীর পানির খাদ্যের পাত্রে বিষ মিষিয়ে দেয়। সোমবার সকালে এক হাজারের বেশি মুরগী বিষক্রিয়ায় মরে যায়। বেচে আছে ৩ থেকে ৩শ মুরগী।
ক্ষতিগ্রস্থ তরুণ খামারী সৌরভ বলেন, ঋণ আর মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খামার করেছি। রাতে খামারের বেড়া কেটে খাদ্যের পাত্রে বিষ প্রয়োগ করে এক হাজারেরও বেশি মুরগী মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। খাদ্যের প্রতিটি পাত্রে বিষের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। এতে আমার ৭৫-৮০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুস সামাদ সিকদার ও রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে মুরগীর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তরুণ উদ্যোক্তাকে পরামর্শ দিয়েছেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও আবদুস সামাদ সিকদার বলেন, ‘এতগুলি মুরগী মারা যাওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মুরগীগুলো কি কারণে মারা গেছে তা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেছি।’